ইপিআই টিকাদান কার্যক্রমে গতি আনতে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে দেশের আটটি বিভাগে সরবরাহ করা হয় আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্স। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির অর্থায়নে এসব গাড়ি সরবরাহ করা হলেও বছরের পর বছর ধরে মাঠপর্যায়ে সেগুলো পড়ে আছে অচল অবস্থায়।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়েও একটি এমন অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, যা এখনো ব্যবহারেই আনা যায়নি। অথচ এটি ব্যবহার হলে টিকা পরিবহন ও বিতরণ ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি সম্ভব হতো।
বিশেষায়িত এসব ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্স ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকা সংরক্ষণে সক্ষম। বিদ্যুৎ কিংবা সৌরশক্তিচালিত এই গাড়িগুলোতে কোল্ড বক্স, আইস প্যাক, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সেন্সর, টিকাদানকর্মীদের যাতায়াত সুবিধা এবং একসঙ্গে বড় পরিসরে বিভিন্ন টিকা পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই অ্যাম্বুলেন্সগুলো পড়ে রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের গ্যারেজেই।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের উপপরিচালক ডা. মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আমাদের কাছে এই ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটি বোঝা হয়ে গেছে। গাড়ি চালাতে চালক ও সংস্থাপন ব্যয়ের কোনো বরাদ্দ নেই। বিষয়টি আমরা ইপিআই কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে চিঠিও দিয়েছি।’
ইপিআই প্রোগ্রাম ম্যানেজার জানান, ‘যথাযথ ফান্ড না থাকায় এখনো এই অ্যাম্বুলেন্সগুলো পরিচালনায় অপারেশনাল ব্যয় বরাদ্দ সম্ভব হয়নি। তবে আগামী সেপ্টেম্বরের ডিপিপি অনুমোদনের পর এগুলো মাঠপর্যায়ে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।’
এ বিষয়ে ইপিআইর লাইন পরিচালক ডা. এ এফ এম শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘এগুলো আমাদের ডোনেশন থেকে পাওয়া। এখনো অপারেশনাল প্ল্যান তৈরি হয়নি। খরচের অর্থ পাওয়া গেলে তখনই এগুলো চালু করা সম্ভব হবে। আপাতত আমরা একটি ইন্টিরিম (অন্তর্বর্তীকালীন) সময় পার করছি, সব কিছুই ধীরগতিতে চলছে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার যখন টিকাদান কর্মসূচি আরও গতিশীল করতে চাইছে, তখন এই আধুনিক প্রযুক্তির অ্যাম্বুলেন্সগুলো ব্যবহারের বাইরে থাকা একটি বড় ব্যর্থতা। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা অকার্যকরই থেকে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :