ষাট থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত সময়কে বলা হয় চলচ্চিত্রের সোনালি যুগ। এ সময়ে তৈরি হয়েছে অনেক গুণী অভিনয়শিল্পী। সেসব শিল্পীরা উপহার দিয়েছেন কালজয়ী অসংখ্য সিনেমা। তারা এখনো অগ্রপথিক হয়ে আছেন চলচ্চিত্রাঙ্গনে। ভবিষ্যতেও থাকবেন। যারা সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন কোটি দর্শকের হৃদয়। অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের, সেই সঙ্গে কাঁদিয়েছেনও। তাদের অনেকেই আজ নেই। তবে রয়ে গেছেন স্মৃতির আয়নায়।সেসব শিল্পীদের স্মরণে প্রথমবারের মতো ব্যতিক্রম এক উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য। ‘স্মৃতির আয়নায় কিংবদন্তির দৃশ্যর ব্যানারে শিল্পী সমিতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আগস্ট-২০২৫ সাল পর্যন্ত যেসব শিল্পীরা প্রয়াত হয়েছেন তাদের স্মরণ করবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। এ ছাড়া জীবিত অসুস্থ শিল্পীদের জন্য করবেন দোয়া।
রোববার সমিতির আঙিনায় দিনব্যাপী কোরআন খতম, স্মরণসভা, দোয়া মাহফিল ও মধ্যাহ্নভোজ-এর আয়োজন করেছে শিল্পী সমিতি। এমনটাই রূপালী বাংলাদেশকে জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা রুমানা ইসলাম মুক্তি।
এই আয়োজনে প্রয়াত শিল্পীদের পরিবার, গুণী অভিনয়শিল্পী সোহেল রানা, শবনম, আলমগীর, আনোয়ারা, আহমেদ শরীফ, নূতন, নাঈম-শাবনাজ, বাপ্পারাজ-সম্রাট, খালেদা আক্তার কল্পনা, রাশেদা আক্তার থেকে শুরু করে আরও অনেক সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পী ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
আয়োজন সম্পর্কে শিল্পী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে শিল্পীদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। কারণ, হাতেগোনা কয়েকজন বাদে কিংবদন্তি শিল্পীরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগেই। যাদের জন্য চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হয়েছে এবং শিল্পী সমিতি পেয়েছি। সেসব শিল্পীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণে এই উদ্যোগ নেওয়া।’ কার্যনির্বাহী সদস্য মুক্তি বলেন, ‘শিল্পীদের কল্যাণেই শিল্পী সমিতি তৈরি হয়েছিল। কমিটিতে যুক্ত হওয়ার পর থেকে চেষ্টা করছি শিল্পীদের জন্য কিছু করার। প্রথমবারের মতো আমরা কয়েকজন মিলে দুঃসাহসী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, এমন সাহস আগে কখনো কেউ দেখায়নি। এই আয়োজনের কথা যারাই অবগত হয়েছেন তারা বাহবা দিচ্ছেন। অনেক শিল্পী এখন আর আগের মতো এফডিসিতে আসেন না। তারাও আয়োজনের কথা জেনে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য শুধু আমার কথায় আমেরিকা থেকে দেশে ছুটে এসেছেন আহমেদ শরীফ মামা। আশা রাখছি, নতুন এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে যাচ্ছে শিল্পী সমিতি।’
চিত্রনায়ক সনি রহমান বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা ব্যতিক্রম এক উদ্যোগ নিয়েছি। সবমহল থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। এ ছাড়া যেসব শিল্পী অসুস্থ তাদের সুস্থতার জন্যও দোয়া করা হবে।’
এই উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছেন শিল্পী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম পারভেজ রুবেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান, কোষাধ্যক্ষ কমল পাটেকর, কার্যনির্বাহী সদস্য চুন্নু, রুমানা ইসলাম মুক্তি, রিয়ানা পারভীন পলি, সনি রহমান ও অভিনেতা শিবা শানু।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন