বাংলাদেশ-নেপাল লড়াই আজ

• কাঠমান্ডুতে ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ

অনেক অপেক্ষা ও প্রতীক্ষার পর ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে আজ পরস্পরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নেপাল। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে হবে দুদলের ম্যাচটি। এরই মধ্যে নেপালে গিয়ে চূড়ান্তভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। নেপাল ম্যাচের জন্য প্রস্তুত লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। অন্যদিকে, বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাগতিক নেপালও। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, দুদলের লড়াই বাড়তি ঝাঁঝ ছড়াবে।

দীর্ঘদিন বছর পর একে অপরের বিপক্ষে আবার আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ ও নেপাল। সর্বশেষ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরেই দুদলের সাক্ষাৎ হয়েছিল। ওই ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩-১ গোলে হারায় নেপাল। এর এক বছর আগে ট্রাই নেশনস কাপেও বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল তারা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সামনে প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবেই দেখা যায় তাদের। এবারও যে নেপাল ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জের হতে যাচ্ছে, সেটি বাড়িয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও অতীত পরিসংখ্যানে নেপালের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশই। এ পর্যন্ত দুদল মোট ২৪টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১৩টি ম্যাচে। আর ৮টি ম্যাচে জয়ের রেকর্ড নেপালের। বাকি ৩টি ম্যাচ ড্র হয়েছে।

নেপাল ম্যাচের আগে বেশ কয়েকটি কারণে বাংলাদেশ দল বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রথমত, দলে নেই একঝাঁক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। দেওয়ান হামজা চৌধুরী, শমিত সোমরা নেপালে খেলছেন না। মোরসালিন, আল আমিন, ফাহামিদুলরা অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে খেলছেন। এই খেলোয়াড়দের ছাড়াই দল গঠন করেছে বাংলাদেশ। প্রাথমিক দলে ছিলেন হামজারা। তাদের নিয়েই পরিকল্পনা করেছিলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। কিন্তু হামজা না খেলায় পরিকল্পনায় গরমিল হয়েছে। তা ছাড়া মোরসালিনদের মতো মেধাবী তরুণ খেলোয়াড়রা না থাকায় দল ভুগবে। দ্বিতীয়ত, দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামের যে মাঠটিতে ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ, সেই মাঠ ফিফা ও এএফসি কর্তৃক অনুমোদিত নয়। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে মাঠটিকে নিষিদ্ধ করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এমন মাঠে খেলা ফুটবলারদের জন্য কতটা নিরাপদ হবেÑ সেটিও চিন্তার বিষয়। তা ছাড়া ম্যাচের আগে মূল গ্রাউন্ডে অনুশীলন করার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ দল। বাইরের একটি মাঠে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলারদের। এ ছাড়া ঘরের মাঠে খেলবে নেপাল। হোম অ্যাডভান্টেজ পাবে তারা। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৮ ধাপ এগিয়ে রয়েছে দলটি। র‌্যাঙ্কিংয়ে নেপাল ১৭৬তম আর বাংলাদেশ ১৮৪তম অবস্থানে রয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে এবারও ভালো কিছু করার প্রত্যাশায় নেপাল। তবে নেপালকে হারানোর প্রত্যয় নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের আগে মিডফিল্ডার মো. হৃদয় বলেছেন, নেপালের বিপক্ষে জয় পেতেই মাঠে নামবেন তারা। জয় পেলে দলের মনোভাব বদলে যাবে। নেপালযাত্রার আগে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন, নেপালকে হারানো অসম্ভব কিছু নয়। জয় পেতে আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ।

আগামী অক্টোবরে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে নেপালে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলছে কোচ কাবরেরার দল। তাই নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে জয়ের চেয়ে প্রস্তুতির দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন এই স্প্যানিশ কোচ। কাবরেরা জানিয়েছেন, দলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় না থাকলেও যারা দলে সুযোগ পেয়েছেন, তারা নিজেদের মেলে ধরার দারুণ সুযোগ পাচ্ছেন। কাবরেরা বলেন, ‘হামজা-শমিত না আসায় অনেকে গত ম্যাচের চেয়ে বেশি গেম টাইম পাবে। এটা তাদের জন্য ভালো সুযোগ। সবার জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই দুই ম্যাচ মূলত হংকংয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতির। এরপরও ম্যাচ মানেই আমরা জয়ের জন্য নামব।’ অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলের ফরোয়ার্ড ইব্রাহিম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, হামজা-সামিত দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। তাদের অনুপস্থিতি নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে পূরণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে ইব্রাহিম বলেন, ‘হামজা-শমিত নেই, আবার অনূর্ধ্ব-২৩ দলেও রয়েছে কয়েকজন। আমরা এখানে যারা রয়েছি, তারা অভিজ্ঞ। আমাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করব।’