সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনসংলগ্ন মালঞ্চ ও চুনকুড়ি নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত বেড়িবাঁধে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর স্লুাইস গেটসংলগ্ন মথুরাপুর গ্রামের ঋষিপাড়ায় নদীর পাড়ে বসবাসরত ৪টি পরিবারের ঘরের মাঝ বরাবর ফাটল ধরে অন্তত এক ফুট ফাঁকা হয়ে গেছে। ফলে চারটি পরিবারের সদস্যরা ঘর ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ওপর বসবাস করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দিন যত যাচ্ছে ভাঙন আতঙ্ক ততই বাড়ছে। এ কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁশের খাঁচা তৈরি করে ভাঙন স্থানে ফেললে পলি জমে ভাঙন রোধ হবে। তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। সামনে গোনে নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে সেই সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলে ফাটল আরও বড় হয়ে সবকিছু নিয়ে বাঁধ নদীতে নেমে যাবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের ঋষিপাড়ায় মালঞ্চ ও চুনকুড়ি নদীর সংযোগ স্থল। আবার ওই স্থানে স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছে। গেট দিয়ে উঁচু এলাকার পানি বের হওয়ায় নদীর চর ও বেড়িবাঁধের মাটি সরে নিচে নেমে গেছে। দ্রুত সংস্কার না করা হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে নদীর প্রবল স্রোতে বসতবাড়ি, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, মিঠাপানির পুকুর, রাস্তাঘাট, হাট-বাজারসহ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হতে পারে।
ভাঙনকবলিত পরিবারের আবু বক্কার গাজী, নেসার আলী গাজী, হামিদা খাতুন ও বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমরা ৩০-৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। নদীতে মাছ-কাঁকড়া মেরে আমাদের সংসার চলে। গত রোববার গভীর রাতে হটাৎ তাদের ঘরের মাঝখান দিয়ে ফাটল ধরে বাঁধ নদীতে নেমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এক ফুটের বেশি জায়গায়জুড়ে ফাঁকা হয়ে মাটি সরে গেছে। খুব ভয়ে আছি, কখন কী হয়! তাই ঘর-দোর খুলে ফেলেছি। এখন রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। অন্য কোথাও জায়গা-জমি নেই যে সেখানে গিয়ে বসবাস করব।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, দ্রুত বাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এসও) প্রিন্সি রেজা বলেন, বাঁধের ভাঙনস্থল পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা এসওকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে এবং ৪টি পরিবারকে আপতত বসবাসের জন্য একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে একটি জায়গা দেখে তাদের স্থানান্তর করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন