বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০২:০১ এএম

‘ম্যাচ উইনার’ নাসুমের সাফল্যের গল্প

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০২:০১ এএম

‘ম্যাচ উইনার’ নাসুমের সাফল্যের গল্প

এশিয়া কাপে পানির বোতল টেনেই সময় পার হচ্ছিল নাসুম আহমেদের। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশে সুযোগ পেয়েই জ¦লে উঠলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ইনিংসের শুরুতে বল হাতে নিয়ে আফগান ব্যাটিং লাইনআপে ভাঙন ধরিয়ে দেন নাসুম। প্রথম বলেই পান উইকেট। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সেদিকউল্লাহ আতালকে। পাওয়ার প্লের মধ্যে চতুর্থ ওভারে ইব্রাহিম জাদরানের উইকেটটিও তুলে নেন এই বোলার। ৪ ওভারে একটি মেডেনসহ ১১ রান দিয়ে এ দুই উইকেট শিকার করেই ম্যাচ-সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন নাসুম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ রানের জয়ের ম্যাচে নায়ক নাসুমের জন্য কাজটা সহজ ছিল না। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে গরমে বেশ ঘাম ঝরছিল তার। তবে চ্যালেঞ্জ জয়ী নাসুম জানান, ‘আমি সব সময় নতুন বলে বোলিং করতে পছন্দ করি। আর এ কাজটাই আমাকে অধিনায়ক করতে বলেছেন। আমি সেই চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করি। ঘাম প্রচুর ছিল, তাই বল গ্রিপ করাটা চ্যালেঞ্জের ছিল। চেষ্টা করেছি স্টাম্প টু স্টাম্প বল রাখার।’

এশিয়া কাপে প্রথমবার একাদশে জায়গা পেয়েই বাজিমাত করা নাসুম বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ-সেরা হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। ৩৯ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এ নিয়ে পঞ্চমবার ম্যাচ-সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে নাসুমের চেয়ে বেশি ম্যাচ-সেরার রেকর্ড আছে শুধু সাকিব আল হাসানের। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১২৯ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ১২ বার ম্যাচ-সেরা হয়েছেন সাকিব। ২০২১ সালের মার্চে হ্যামিলটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে যাত্রা শুরু করেন নাসুম। গত চার বছরে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অপরিহার্য সদস্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই ক্রিকেটার। তার প্রতিভা আর জীবনসংগ্রামের এক সফল খেলোয়াড়ের মূর্ত প্রতীক। সংগ্রামী মানুষের জন্য উদাহরণ তিনি।

বিশেষ করে সফল খেলোয়াড়ের একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণও। নাসুমের জন্ম ৫ ডিসেম্বর ১৯৯৪ সালে সিলেটের জালালাবাদ আবাসিক এলাকায়। তার পৈতৃক নিবাস সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মর্দাপুর গ্রামে হলেও জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা এমনকি ক্রিকেটার হওয়াÑ সবকিছুই সিলেটকে ঘিরে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও একটি সুন্দর পারিবারিক সম্পর্ক ও পরিবেশে বড় হয়েছেন নাসুম। বাবা আক্কাস আলী অক্লান্ত পরিশ্রম করে, কখনো রিকশা চালিয়ে, কখনো সবজি বিক্রি করে, আবার কখনো রঙের কাজ করে ছেলেকে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার সুযোগ করে দিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন জাতীয় দলে। নাসুম তার অক্লান্ত পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর প্রবল মেধার জোরে নিজের একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। তাদের পরিবারের স্বাভাবিক সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয় ২০২০ সালে নাসুম আহম্মেদের মায়ের মৃত্যুর পর। তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ের পর সিলেট নগরীর একটা হাউজিং এস্টেটে ৮ হাজার টাকা বেতনে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করে পৃথকভাবে বসবাস শুরু করেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম পক্ষের সন্তানের দিকে নজর দিতে পারেননি আক্কাস আলী। তারপর একসময় নাসুম স্ত্রীসহ ঢাকায় থাকতে শুরু করেন।

তিনি তার একমাত্র বোনকে নিজের কাছে রেখে দেখাশোনাসহ দায়দায়িত্ব পালন করছেন। কেউ কেউ বাবা-ছেলের এই অবস্থা নিয়ে সমালোচনা করলেও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক বটে। এতে আক্কাস আলীর কোনো আক্ষেপও নেই। তিনি বলেন, ‘আমি একজন বাবা হিসেবে শুধু চাই নাসুম বড় কিছু হোক। নিজের জন্য আলাদা কিছু চাইনি, চাই না।’ তবে নাসুম আহম্মেদ সংসার চালানোর জন্য বাবাকে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে থাকেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!