শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম

পৃথিবীর বুকে হাঁটবে ফের বিলুপ্ত ডোডো পাখি!

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম

পৃথিবীর বুকে হাঁটবে ফের বিলুপ্ত ডোডো পাখি!

ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত মরিশাস দ্বীপে আজ থেকে কয়েক শ বছর আগে লম্বা বাকানো ঠোঁট, ছোট্ট ডানার হাঁসের মতো দেখতে এক পাখির বসবাস ছিল। ১৫৯৮ সালে ডাচ বা ওলন্দাজরা মরিশাস দ্বীপটি দখল করে নেওয়ার পর এ পাখি সম্পর্কে জানতে পারে পৃথিবীর মানুষ। নামে পাখি হলেও উড়তে না পারা এই প্রাণীর নাম ডেডো। কিছুটা বোকা প্রকৃতির এই পাখি মানুষের খাদ্যাভ্যাসের শিকার হয়ে অধিক নিধনের কারণে একটা সময়ে বিলুপ্তও হয়ে যায়। ১৬৬২ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে ছিল ডোডো পাখির বসবাস। এর পরই চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যায় এই পাখি। তবে আশার কথা হলো, একটি মার্কিন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির গবেষণায় জানা যাচ্ছে, ডোডো পাখিকে ফিরিয়ে আনার পথে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। 

বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়ে আনার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা এই মার্কিন কোম্পানির নাম কোলসাল বায়োসায়েন্সেস। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা ডোডো পাখিকে ফেরানোর পথে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা করেছে, তাদের গবেষক দল সফলভাবে পিজিয়নের প্রাইমোর্ডিয়াল জার্ম সেলস বা প্রজনন-পূর্ববর্তী কোষ পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছে। এটাই প্রথমবার মুরগি ও হাঁসের বাইরে অন্য কোনো পাখির ক্ষেত্রে এমন সাফল্য এল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উন্নতি কেবল পাখি-জেনেটিকস নয়, পুরো ডি-এক্সটিংকশন বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

কোলসালের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বেন ল্যাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি পাখি প্রজাতির ক্ষেত্রে এই নতুন কাজটি করা সম্ভব হয়েছে। এবার পায়রার ক্ষেত্রেও তা করা গেছে। এটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, অথচ আমরা মাত্র ১৮ মাসে তা অর্জন করেছি। এটি ডোডো ফিরিয়ে আনার জন্য এক বিশাল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি।’

ল্যাম জানিয়েছেন, এটি ছাড়া আমরা বলতে পারতাম না ডোডো ফিরিয়ে আনতে ২০ বছর লাগবে, না ৩০ বছর। কিন্তু এখন আমরা নিশ্চিত, আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে ডোডোকে দেখতে পাব। আশা করছি, এডিটিং প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হলে সময় আরও কম লাগতে পারে।’

কোলসাল জানিয়েছে, তারা আরও ১২০ মিলিয়ন ডলার অর্থ পেয়েছে। ফলে তাদের মোট তহবিল দাঁড়িয়েছে ৫৫৫ মিলিয়ন ডলার এবং কোম্পানির মোট অর্থের পরিমাণ ছুঁয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থে তারা তাদের জিন সম্প্রসারণ, জিনোম সিকোয়েন্সিং বাড়ানো এবং ডোডো ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীদের সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু করছে।

ডোডোর পাশাপাশি কোলসালের ডায়ার উলফ প্রকল্পেও অগ্রগতি ঘটেছে। তিনটি নেকড়েÑ রোমুলাস, রিমুস ও খালিসি এখন সুরক্ষিত। এরা বর্তমানে ২ হাজার একর জায়গায় একসঙ্গে বসবাস করছে। তারা এখন আর মানুষের খাওয়ানো খাবারের ওপর নির্ভর করছে না, বরং প্রাকৃতিক দলগত আচরণ যেমন একত্রে শিকার করা শুরু করেছে। কোম্পানির মতে, এটি প্রমাণ করছে যে হাজার বছর আগে বিলুপ্ত প্রাণীর স্বাভাবিক প্রবৃত্তি আবার ফিরে আসতে পারে।

তবে সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়ে আনা পশু কল্যাণ, পরিবেশ ও ইকোলজির জন্য কতটা নিরাপদ? কোলসালের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বেথ শাপিরো বলেন, ‘আমরা শুধু ডি-এক্সটিংকশন কোম্পানি নই, বরং স্পিসিজ সংরক্ষণের জন্য প্রযুক্তি উন্নয়ন করছি। একসময় যে প্রাণী এই ইকোসিস্টেমে ভূমিকা রাখত, তাকে ফিরিয়ে আনলে পুরো পরিবেশ আরও সহনশীল হতে পারে।’ তিনি ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে নেকড়ে ফিরিয়ে আনার পর পুরো ছবি পাল্টে গেছে।

কোলসালের প্রতিষ্ঠাতা ল্যাম বলেন, ‘আমাদের কাজ জটিল, কখনো রোমাঞ্চকর, কখনে ভয় ধরানো। কিন্তু বিজ্ঞানকে আবার জনপ্রিয় করার একমাত্র উপায় হলো এই কঠিন আলোচনা সবার সঙ্গে ভাগ করা।’

আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই যদি মরিশাসে ডোডো পাখি আবার হাঁটে, তবে সেটি শুধু এক প্রজাতির পুনর্জন্ম নয়, বরং বিজ্ঞান ও প্রকৃতি সংরক্ষণের নতুন অধ্যায় রচনা করবে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!