রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির গঠন ও প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে দেখা দিয়েছে ‘জগাখিচুড়ি’ অবস্থা।
প্রস্তাবিত কঠামোতে বলা হয়েছে, প্রতিটি কলেজে এখনকার মতো সব বিষয় পড়ানো হবে না। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অনুষদে ২৩টি বিষয়ে পাঠদান হবে। অনুষদগুলোকে আবার ভাগ করা হবে সাত কলেজে। প্রতিটি বিষয়ে ৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে।
এদিকে সরকারের এই সিদ্ধান্তে বাগড়া দিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষকরা। তারা বলছেন, এই প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলে সাত কলেজ তার ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি তৈরি হবে নানা সংকট। শিক্ষার্থী ভর্তি কম নেওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষাও সংকোচিত হয়ে আসবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত কলেজকে অধিভুক্ত করার দাবি তাদের। এ নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলন-মানববন্ধনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে শিক্ষকদের এই দাবির বিপরীতে অবস্থান সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের।
পাল্টা কর্মসূচিও দিয়েছেন তারা। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা ষড়যন্ত্র করছেন অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরা শিক্ষা সিন্ডিকেট ভেঙে স্বাধীন-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের স্বপ্ন দেখছি, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অধ্যাদেশ জারি না হলে ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে লং মার্চের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বাদ দিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল তা পূরণ হয়নি। উল্টো তৈরি হয়েছিল নানা জটিলতা।
অধিভুক্তির পর ঠিক সময়ে পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশ, হয়রানি বন্ধ, পাড়াশোনার খরচ বেশিসহ বিভিন্ন দাবিতে নানা সময়ে আন্দোলন করছিল এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দীর্ঘ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্তি বাতিল করে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় সরকার।
সরকারি এই সাত কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। এসব কলেজে পড়াশোনা করছেন প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী।
যে প্রক্রিয়ায় হচ্ছে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ও ভর্তি কাঠামো এরইমধ্যে প্রস্তুত করেছে মন্ত্রণালয়। আগামী বছর থেকে শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম। শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাদেশ জারি হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনকার মতো প্রতিটি কলেজে সব বিষয় পড়ানো হবে না। প্রশাসনিক ও ভর্তি কাঠামোতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে চারটি অনুষদের অধীনে ২৩টি বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে।
অনুষদগুলো হলো- সায়েন্স, আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ, বিজনেস স্টাডিজ এবং ল অ্যান্ড জাস্টিস। আর শিক্ষা কার্যক্রম হবে ৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনে এবং ৬০ শতাংশ অফলাইনে। তবে সব পরীক্ষা সশরীরে দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।
স্নাতক পর্যায়ের প্রতিটি বিষয়ে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন। ঢাকা কলেজে গণিত, পরিসংখ্যান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ডাটা সায়েন্স, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োটেকনোলজি ও রসায়ন বিভাগের পাঠদান করার সুপারিশ করা হয়েছে।
ইডেন কলেজে পদার্থবিজ্ঞান, অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, ফরেস্ট্রি সায়েন্স পড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। বদরুন্নেসা কলেজে আরবান অ্যান্ড রুরাল প্ল্যানিং এবং এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট পড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি তিতুমীর কলেজে অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, এইচআর, হোটেল অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং ও ব্যাংক অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিষয়ে পাঠদান করার সুপারিশ করা হয়েছে।
আর সরকারি বাঙলা কলেজে জার্নালিজম, ফটো অ্যান্ড ভিডিওগ্রাফি, অ্যাপ্লাইড স্যোসিওলজি, পলিটিক্যাল ইকোনমিক্স, ইকোনমিক্স এবং ডিপ্লোম্যাটিক স্টাডিজ এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে যৌথভাবে ‘ল অ্যান্ড জাস্টিস’ বিভাগে পাঠদানের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে নারী শিক্ষার্থীদের কলেজে পুরুষ ও ছেলে শিক্ষার্থীদের কলেজে নারীদের ভর্তির বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
এদিকে এই সাত কলেজের মধ্যে ৫টিতে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমে শ্রেণিতে পাঠদান করানো হচ্ছে। বাকি দুটি ইডেন ও সরকারি তিতুমীর কলেজেও উচ্চ মাধ্যমিক পাঠদান চালুর চিন্তা রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এই সাত কলেজে একাধিক শ্রেণিতে পাঠদান চলবে।
শিক্ষকদের আপত্তি যে কারণে
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে সাত কলেজের বিসিএস ক্যাডারের শিক্ষকদের কোনো আপত্তি না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রস্তাবিত কাঠামো নিয়ে আপত্তি তুলেছেন তারা। তারা বলছেন, প্রস্তাবিত কাঠামোর আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক ক্যাম্পাস স্থাপন না করে কলেজগুলোকে নতুন এই ইউনিভার্সিটির অধিভুক্ত করা হোক।
তা না করা হলে, সাত কলেজের যেমন তাদের ঐতিহ্য হারাবে, একইসঙ্গে কলেজগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতির মুখে পড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থী কমে গিয়ে উচ্চশিক্ষার সংকোচন হবে। কলেজগুলোর শিক্ষকদের পদ-পদবি নিয়েও জটিলতার সৃষ্টি হবে। এরই মধ্যে তারা ইউজিসির সামনে মানববন্ধন, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে স্মারকলিপি, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
কলেজগুলোর শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাত কলেজের মধ্যে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। যেমন ঢাকা কলেজ উপমহাদেশের প্রাচীনতম কলেজ, ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইডেন কলেজ বাংলা প্রদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম মহিলা কলেজ।
বাকি সাত কলেজেরও রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসব কলেজ বেশি গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু সরকার যে প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাচ্ছে তাতে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শত বছরের বেশি সময়ের ইতিহাস বিলুপ্ত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কলেজের এক শিক্ষক বলছেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হলে যেমন কলেজের ঐতিহ্য বিলুপ্ত হবে তেমনি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সংকোচিত হবে। যেমন আমাদের কলেজের এখন প্রতিবছর স্নাতকে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। নতুন প্রক্রিয়া এক হাজার থেকে পনেরোশ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে।
আবার একজন শিক্ষার্থী অ্যাকাউন্টসে ভর্তি হলে তাকে ক্লাস করতে হবে তিতুমীর কলেজে আবার এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্টের ক্লাস হবে বদরুন্নেছায়। ঢাকা শহরের যানজট পরিস্থিতিতে এভাবে ঘুরে ঘুরে ক্লাস করা ও নেওয়া সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যারা ভর্তির সুযোগ পান না তাদের ঢাকা কলেজে ভর্তির জন্য বেশি আগ্রহ থাকে। সারা দেশ থেকে প্রতি বছর আমাদের কলেজে বিভিন্ন বিভাগে সর্বনি¤œ দেড়শ থেকে চারশ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। কিন্তু নতুন নিয়মে বলা হচ্ছে, ৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন। তাহলে বাকি শিক্ষার্থী কী করবেন?’
ঢাকা কলেজের আরও কয়েকজন শিক্ষক জানান, ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কয়েক সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করানো হয়। সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি হলে কলেজের সব সম্পত্তি চলে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। তাহলে কলেজের কী হবে? আবার বলা হচ্ছে, কলেজ থাকবে। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পাঠদান কীভাবে চলে।’
ইডেন কলেজের আরেক শিক্ষক বলেন, ঢাকায় নারীদের জন্য বিশেষায়িত বড় দুটি কলেজ হলো ইডেন ও বদরুন্নেছা। নারী শিক্ষার বিস্তারে কলেজ দুটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে রাজধানীতে নারীদের উচ্চশিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া আরও কয়েকজন শিক্ষক বলেন, এই সাত কলেজের শিক্ষকরা বিসিএস ক্যাডারভুক্ত। আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের পদও সংকুচিত হবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় হলে কলেজের দেড় হাজারের বেশি পদ বিলুপ্ত হতে পারে। ইতোপূর্বে জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ফলে এই সমস্যা হয়েছিল।
ইডেন মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম গত বুধবার মানববন্ধনে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় করার বিপক্ষে নই। এই সাত কলেজের বর্তমান কাঠামো অক্ষুণ রেখে সাত কলেজের জন্য অধিভুক্তমূলক বিশ্ববিদ্যালয় করা হোক।
মুখোমুখি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
সাত কলেজের শিক্ষকরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আদলে সাত কলেজ নিয়ে কেন্দ্রীয় ইউনিভার্সিটি চাইলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের চাওয়া, সরকার যে মডেলে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাচ্ছে সেই আলোকেই যেন করা হয়।
তারা বলছেন, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে শিক্ষকরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করছেন। এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কলেজ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারি না হলে ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে লং মার্চের হুশিয়ারি দেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রস্তাবিত ইউনিভার্সিটি নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এখন আবার নতুন করে ইউনিভার্সিটির কার্যক্রমের বিপক্ষে শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিচ্ছেন। তারা ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে ইউজিসি-মাউশিতে গিয়ে ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে তদবির করছেন। ঐতিহ্য রক্ষার নামে তারা শেষ মুহূর্তে এসেও সরকারের কাজে বাধা সৃষ্টি করতে কতিপয় শিক্ষার্থীকে ব্যবহার করছে।
ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে রাজপথে শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরেছে। তখন শিক্ষকদের কোনো সিমপ্যাথি ছিল না। কখনোই তারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে গিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেননি।
শিক্ষার্থীরা যখন উচ্চশিক্ষার প্রশ্নে রাজপথে গিয়ে সরকারকে যৌক্তিকতা বুঝিয়ে একটি চূড়ান্ত সমাধানের পথে হাঁটছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক উস্কানি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন।
সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্তী প্রশাসক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, কলেজগুলোয় উচ্চমাধ্যমিক এবং শিক্ষকদের পদগুলো অক্ষুণ রেখেই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। তবে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অন্য কোনো চিন্তা করা হবে কি না সেটা ইউজিসি ও মন্ত্রণালয় দেখবে।
ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার বলেন, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। তবে কলেজের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তাও ধরে রাখার সুযোগ দিতে হবে।
কলেজগুলোর বিদ্যমান অবকাঠামো ভাঙলে নানা সংকট তৈরি হবে, শিক্ষার সংকোচন হবে। তাই অংশীজনদের নিয়ে বসে আরও বিচার-বিশ্লেষণ করে সংকট সমাধান করা প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে আমরা অংশীজনদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করে একটি কাঠামো দাঁড় করিয়েছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে অগ্রাধিকার দিয়েছি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষকদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেটা আমরা দেখব, তাদের সমস্যা দূর করব। কিন্তু শিক্ষকদের দিকে তাকিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। বিষয়টি নিয়ে আমরা যতটা এগিয়েছি সেখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন