সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

হাসিনাকে কি ফেরত দেবে ভারত, কী আছে দু’দেশের বন্দি বিনিময় চুক্তিতে

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

শেখ হাসিনা ও মোদি। ছবি- সংগৃহীত

শেখ হাসিনা ও মোদি। ছবি- সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তার এই সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেছে। রায় ঘোষণার সময় জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবীরা ছাড়াও জুলাই আগস্টে নিহত কয়েকজনের স্বজন ও অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া অসংখ্য ছাত্রনেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

রায়ে আদালত বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। একটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অন্য দুটি অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির রায় ঘোষণার পর শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে নতুন করে আলোচনায় শুরু হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ভারত ফেরত দেবে কি না, সেই প্রশ্ন করছেন অনেকে। ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, ‘হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রত্যাশিত ছিল। তবে ভারত বাংলাদেশের এই পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে প্রত্যর্পণ করবে না।’

হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রত্যাশিত ছিল। তবে ভারত বাংলাদেশের এই পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে প্রত্যর্পণ করবে না।

- শ্রীরাধা দত্ত

 

তিনি বলেন, ‘ভারত কোনও অবস্থাতেই তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না এবং অনেক সময়ই তা ভঙ্গুর মনে হয়েছে।’

‘হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রত্যাশিতই ছিল’ মন্তব্য করে শ্রীরাধা দত্ত বলেন, ‘নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এমন প্রমাণও রয়েছে।’

নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এমন প্রমাণও রয়েছে।

- শ্রীরাধা দত্ত

জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি পাল্টা-বয়ান তৈরির চেষ্টা করবে। কিন্তু সার্বিকভাবে বাংলাদেশিরা মনে করেন, হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।’

আওয়ামী লীগ একটি পাল্টা-বয়ান তৈরির চেষ্টা করবে। কিন্তু সার্বিকভাবে বাংলাদেশিরা মনে করেন, হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।

      - শ্রীরাধা দত্ত

কী আছে ভারত বাংলাদেশ বন্দি বিনিময় চুক্তিতে ?

২০১৩ সালে একটি দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ভারত এবং বাংলাদেশ। পরে ২০১৬ সালে চুক্তি সংশোধন করা হয়; যাতে দুই দেশের মধ্যে পলাতক বন্দি ও আসামিদের বিনিময় আরও সহজ এবং দ্রুত হয়।

এই চুক্তিটি বেশ কিছু ভারতীয় পলাতক আসামি, বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত আসামিদের বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা এবং (ভারতের) বাইরে কাজ করার প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছিল। একই সময়ে, বাংলাদেশ জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) মতো সংগঠনগুলোর থেকেও সমস্যায় পড়েছিল, এই গোষ্ঠীটির সদস্যদের ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামের মতো রাজ্যে লুকিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

বন্দি বিনিময় চুক্তির কারণে ২০১৫ সালে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে সফলভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল নয়াদিল্লি। তারপর থেকে এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আরও একজন পলাতক আসামিকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে। ভারতও এই চুক্তির মাধ্যমে অতীতে বাংলাদেশের পলাতক কয়েকজনকে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছিল।

চুক্তি অনুযায়ী, ভারত ও বাংলাদেশের এমন ব্যক্তিদের একে-অপরের কাছে প্রত্যর্পণ করার কথা যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে... বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে বা দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, অথবা অনুরোধ করা দেশের একটি আদালতের মাধ্যমে প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ করার জন্য তারা ওই আসামিকে ফিরিয়ে নিতে চাইছে।

যদিও ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে হাসিনার প্রত্যাবর্তন চাওয়ার অধিকার বাংলাদেশের রয়েছে, তারপরও এই চুক্তিতে ভূ-রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রভাবগুলো বেশ জটিলভাবেই  রয়ে গেছে। ভারত যদি হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে রাজি হয়, তবে ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তির চিঠি এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির কঠোর বাস্তবতা উভয়ের সাপেক্ষে এই প্রক্রিয়াটি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের মাধ্যমে হবে।

ড. সঙ্গীতা তাক একজন একাডেমিক এবং আইন বিশেষজ্ঞ যিনি পাঞ্জাবের রাজীব গান্ধী ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ল-এর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, যদিও কৌশলগত বা পরিভাষাগত বিষয়গুলো মূলত প্রত্যর্পণ চুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তবে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং মানবাধিকার বিবেচনা চুক্তিটিকে অবিশ্বাস্যভাবে জটিল এবং সংবেদনশীল ইস্যুতে পরিণত করবে।

তাক বলেন, বাংলাদেশ ভারতের কাছে হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক প্রত্যর্পণের অনুরোধ জমা দিয়েছে এবং এর মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই অনুরোধটিতে অবশ্যই হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিশদ বিবরণ দিতে হবে এবং বিচারিক আদেশ, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং অন্যান্য প্রমাণপত্রসহ সহায়ক অন্যসব নথির শক্তিশালী সংগ্রহ এতে থাকতে হবে।

সেই সময় তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, প্রত্যর্পণের অনুরোধের মধ্যে অবশ্যই এই (নিশ্চয়তাও) অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে যে—বাংলাদেশে ন্যায্য বিচার হবে এবং সেই বিচার পক্ষপাতমূলক হবে না।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!