বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

রঙে নয়; ইমানেই মানুষের মর্যাদা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

রঙে নয়; ইমানেই মানুষের মর্যাদা

ধনী-গরিব, সাদা-কালো সবাই আল্লাহর সৃষ্টি। মহান আল্লাহর বান্দা। মহান আল্লাহ গোটা পৃথিবীকে বৈচিত্র্যময় করে সাজিয়েছেন। তাঁর সৃষ্টিতে লুকিয়ে আছে অফুরন্ত রহস্য।

সাদা কিংবা কালো বর্ণের হওয়ায় কারো মর্যাদায় তারতম্য হয় না। শুধু গায়ের রঙের ভিত্তিতে কেউ আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে না। কিংবা ইসলামের দৃষ্টিতেও কাউকে গায়ের রঙের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ ভাবার সুযোগ নেই। ইসলামে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি হলো তাকওয়া।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। (সুরা: হুজুরাত, আয়াত: ১৩)।

তাই তো বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘হে লোক সকল! শোন, তোমাদের প্রতিপালক এক, তোমাদের পিতা এক। শোন, আরবির ওপর অনারবির এবং অনারবির ওপর আরবির, কৃষ্ণকায়ের ওপর শ্বেতকায়ের এবং শ্বেতকায়ের ওপর কৃষ্ণকায়ের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নেই। শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা আছে তো শুধু ‘তাকওয়ার’ কারণেই। (শুআবুল ইমান)।

কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাও মানুষের সঙ্গে বর্ণবৈষম্য করে বসি। গায়ের রঙের কারণে অন্যকে অবজ্ঞা করে ফেলি, যা ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয় অপরাধ হলেও আমরা একে কোনো অপরাধই মনে করি না।

তাই তো মাঝে-মধ্যেই হাসি-ঠাট্টার ছলে নিজেদের পরিচিত মহলের লোকদের কালো বলে তিরস্কার করে বসি, যা একজন মুমিনের জন্য কোনোভাবেই সমীচীন নয়। কেননা আমাদের প্রিয়নবী (সা.) এ ধরনের কাজ পছন্দ করতেন না; বরং তিনি এসব কাজকে জাহিলি স্বভাব আখ্যা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, মা‘রূর (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার রাবাজা নামক স্থানে আবু জার (রা.)-এর সঙ্গে দেখা করলাম। তখন তাঁর পরনে ছিল এক জোড়া কাপড় (লুঙ্গি ও চাদর) আর তাঁর ভৃত্যের পরনেও ছিল ঠিক একই ধরনের এক জোড়া কাপড়। আমি তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, একবার আমি জনৈক ব্যক্তিকে গালি দিয়েছিলাম এবং আমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছিলাম। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে বললেন, আবু জার! তুমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছ? তুমি তো এমন ব্যক্তি, তোমার মধ্যে এখনো অন্ধকার যুগের স্বভাব বিদ্যমান।

জেনে রেখ, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তায়ালা তাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তাই যার ভাই তার অধীনে থাকবে, সে যেন নিজে যা খায় তাকে তা-ই খাওয়ায় এবং নিজে যা পরিধান করে, তাকেও তা-ই পরায়। তাদের ওপর এমন কাজ চাপিয়ে দিও না, যা তাদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক। যদি এমন কষ্টকর কাজ করতে দাও, তাহলে তোমরাও তাদের সে কাজে সহযোগিতা করবে। (বুখারি, হাদিস : ৩০)।

হাদিস ব্যাখ্যাকারদের মতে, এখানে আবু জার (রা.) মূলত কোনো সাহাবির মা কালো হওয়ায় কালো নারীর সন্তান বলে ফেলেছিলেন, যা মহানবী (সা.) পছন্দ করেননি।

এখানেই শেষ নয়। অনেকে তাদের সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের গায়ের রং কালো হলে স্ত্রীকে সন্দেহ করতে শুরু করে। আত্মীয়-স্বজনরাও সামনে-পেছনে হাসাহাসি করে, এটাও অনুচিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক বেদুইন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান জন্ম দিয়েছে। আর আমি তাকে (আমার সন্তান হিসেবে) অস্বীকার করছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার কি উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সেগুলোর কী রং? সে বলল, লাল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সেগুলোর মধ্যে সাদা-কালো মিশ্রিত রঙের কোনো উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ, সাদা-কালো মেশানো রঙের অনেক আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এ রং কীভাবে এলো বলে তুমি মনে করো? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! বংশ সূত্রের প্রভাবে এমন হয়েছে। তিনি বলেন, সম্ভবত তোমার সন্তানও বংশ সূত্রের প্রভাবে (পূর্বপুরুষের কেউ কালো ছিল বলে) এমন হয়েছে। এবং তিনি এ সন্তানটিকে অস্বীকার করার অনুমতি লোকটিকে দিলেন না। (বুখারি, হাদিস: ৭৩১৪)।

অতএব, প্রত্যেক মুমিনের উচিত বর্ণবৈষম্যের মতো জাহিলি স্বভাব থেকে নিজেদের বিরত রাখা। তাকওয়া অবলম্বনের চেষ্টা করা। মানুষকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!