শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুর চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চিড়িয়াখানার ফটকে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের সমাগম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট কাউন্টারের সামনে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পূজার সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা চার দিন স্কুল-কলেজ ও অফিস বন্ধ থাকায় অন্যান্য বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ (গতকাল) দর্শনার্থীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। এদিকে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও রাজধানী ছাড়িয়ে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের মতো আশপাশের জেলা থেকে অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন বিভিন্ন প্রাণী কাছ থেকে দেখতে।
ফটকের বাইরে কথা হয় নবীনগর থেকে আসা দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আনি ও তার মা তনুশ্রী সঙ্গে। তনুশ্রী জানায়, এই প্রথম সে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছে। তাদের স্কুল থেকে প্রায় ৫০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমী বা দুর্গাপূজার শেষ দিন হওয়ায় অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারও নানা ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আগে ঘুরে গেছে চিড়িয়াখানা।
ভেতরে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় দর্শনার্থীদের গাছের ছায়া কিংবা বিশ্রাম ছাউনিতে বসে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। বৃষ্টির মধ্যেও বাঘ, সিংহ, হরিণ, বানর, জিরাফসহ নানা প্রাণীর খাঁচার সামনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। অভিভাবকেরা সন্তানদের নানা প্রাণীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন, কেউ ছবি তুলছিলেন বা ভিডিও করছিলেন, আবার কেউ পরিবারসহ দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন।
পুরান ঢাকার ওয়ারী থেকে আসেন চাকরিজীবী মাজেদুল হাসান ও তার পাঁচ বছরের মেয়ে আফরোজা। তিনি বলেন, ‘একে তো বৃষ্টি, তার ওপর বসার জায়গা খুঁজতে অনেক সময় চলে গেল। তবু মেয়ে বাঘ, হরিণ, জিরাফ, ইমু পাখি দেখে খুব খুশি হয়েছে।’ চিড়িয়াখানার ক্যান্টিনেও ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। তবে তাদের অভিযোগ, খাবারের দাম তুলনামূলক বেশি। সুলভ মূল্যে খাবার সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পূজার ছুটিতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে তারা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে চিড়িয়াখানার বাইরে দেখা গেছে ভ্রাম্যমাণ হকারদের ভিড়। আচার বিক্রেতা শুভ্র বলেন, দর্শনার্থীর সংখ্যা অন্য যেকোনো দিনের চেয়ে অনেক বেশি। বেচাবিক্রিও ভালো হচ্ছে। বিকেলের দিকে বৃষ্টি কমলে লোকজন আরও বাড়বে বলে আশা করছি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন