নিজেদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পুরো গতিপথ পুনর্নির্মাণ করতে প্রথম একটি বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ভারত ও চীন। যত দ্রুত সম্ভব ভারত ও চীন সীমান্ত বিরোধ সমাধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ। জানা গেছে, বিরোধপূর্ণ এলাকায় সীমানা নির্ধারণের সমাধান করতে একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হবে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের বৈঠক শেষে গত মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
এ বিবৃতিতে জানানো হয়, দুপক্ষই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরাসরি বিমান চলাচল আবার শুরু করার এবং কৈলাস পর্বত এবং মানস সরোবর হ্রদে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং দুই পক্ষ তিনটি বাণিজ্য পয়েন্ট লিপুলেখ পাস, শিপকি লা এবং নাথু লা-এর মাধ্যমে সীমান্ত বাণিজ্য আবার চালু করার বিষয়েও সম্মত হয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষ এবং দীর্ঘ সামরিক অচলাবস্থার পর দুই দেশের সম্পর্ক প্রায় তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু দুই দেশের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ, বাণিজ্য ঘাটতি ও ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও, নয়াদিল্লি সফরে নিজেদের সম্পর্ক পুনর্গঠনের ওপর জোর দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ওয়াশিংটনের অতিরিক্ত শুল্কারোপের চাপ সামাল দিতে দুপক্ষই এখন পারস্পরিক সহযোগিতায় সম্ভাবনা খুঁজছে।
চীন ও ভারত কূটনৈতিক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পুনরায় সরাসরি বিমান চলাচল চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেইজিংয়ের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইয়ির নয়াদিল্লি সফরের পর কর্মকর্তারা দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এরপর পাকিস্তান যাবেন। বেইজিং এবং নয়াদিল্লি তাদের বিতর্কিত সীমান্ত নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে, পর্যটন ভিসা প্রদান পুনরায় শুরু করতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতেও সম্মত হয়েছে। বেইজিং থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে। গতকাল সিনহুয়ার এক খবরে বলা হয়, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনায়, উভয় পক্ষ ‘সীমান্ত সীমানা নির্ধারণ আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা অন্বেষণ’ করতে সম্মত হয়েছে এবং তিনটি সীমান্ত বাণিজ্য বাজার পুনরায় চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
২০২০ সালে এক মারাত্মক সীমান্ত সংঘর্ষের পর বিশ্বের জনবহুল এ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু গত অক্টোবরে রাশিয়ায় এক শীর্ষ সম্মেলনে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হলে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। আগস্টের শেষদিকে মোদি চীন সফর করবেন। ২০১৮ সালের পর এটি হবে তার প্রথম চীন সফর।