ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালতের বাইরে আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আত্মঘাতী হামলাকারী আদালতে প্রবেশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু সুযোগ না পেয়ে একটি পুলিশ গাড়িকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রথম কাজ হচ্ছে হামলাকারীর পরিচয় শনাক্ত করা বলে জানান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদের একটি আদালতের বাইরে সংঘটিত আত্মঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে এই হামলায় ‘ভারতের সক্রিয়ভাবে সমর্থিত’ চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো জড়িত। মঙ্গলবার এক সরকারি বিবৃতিতে তিনি এই অভিযোগ তোলেন। শাহবাজ শরিফ তার বিবৃতিতে বলেন, ভারতের সন্ত্রাসী প্রক্সিগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তানের নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা নিন্দনীয়। ভারতকে এই অঞ্চলে প্রক্সির মাধ্যমে সন্ত্রাস ছড়ানোর জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের করা অভিযোগ সম্পর্কে ভারত এখনো কোনো সরকারি মন্তব্য করেনি। ইসলামাবাদের পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (পিআইএমএস) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উপস্থিত ডা. আদনান জানান, বিস্ফোরণের পর ১২টি মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে এবং সেগুলো জরুরি বিভাগ থেকে মর্গে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে আইনজীবীদের প্রতিনিধিরা জানান, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন আইনজীবী রয়েছেন, যারা বিস্ফোরণের সময় আদালতের বাইরে তাদের মক্কেলদের সঙ্গে ছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহসিন নাকভি বলেন, ‘আজ ইসলামাবাদে হামলার সঙ্গে অনেক সংযোগ রয়েছে এবং এ বিষয়ে শিগগিরই প্রমাণ সামনে আনা হবে। যেই জড়িত থাকুক না কেন, এমনকি যদি সে অন্য কোনো দেশের নাগরিকও হয়, কাউকে ক্ষমা করা হবে না। তিনি আরও বলেন, ‘দুই সপ্তাহ পর থেকে কোনো যানবাহন ই-ট্যাগ ছাড়া ইসলামাবাদে প্রবেশ করতে পারবে না।’
এদিকে আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে ২০ পাকিস্তানি তালেবান বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় দফার শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর গতকাল জাতিসংঘে উদ্বেগ জানায় ইসলামাবাদ। অভিযোগ উঠেছে, সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম উসকে দিতে অস্ত্র মজুত করছে কাবুল। আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালেবান থেকে আলাদা হলেও কাবুলের শাসকগোষ্ঠীর মিত্র পাকিস্তানি তালেবান। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই পাকিস্তানি ভূখ-ে তৎপরতা বাড়তে শুরু করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান, বা সংক্ষেপে টিটিপি’রও। সোমবার আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে অভিযান চালিয়ে ২০ টিটিপি বিদ্রোহীকে হত্যার কথা জানায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।

