ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫

শেকৃবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হেনস্তা করল ‘ছাত্রদলের সঙ্গে চলাফেরা করা’ নেতাকর্মীরা

শেকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০৮:৫৩ এএম
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) চারজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (০৫ নভেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে প্রশাসনিক ভবন ও এর আশপাশে এ ঘটনা ঘটে।

সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, দুপুর ৩টার দিকে কতিপয় বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতাকর্মী প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করে আওয়ামীসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে চারজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় তারা অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করেন।

জানা যায়, মারধর ও হেনস্তায় জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন শেকৃবি শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন, তবে বর্তমানে তিনি ড্রপআউট। এ ছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদলকর্মী আব্দুল্লাহ আল মারুফ, যিনি ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং তিনিও ড্রপআউট। অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত সময়ে স্নাতক সম্পন্ন না করেও তিনি অবৈধভাবে হলে সিট দখল করে আছেন এবং নবীন শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে বাধ্য করেন।

অন্যদিকে, অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ২০১৬–১৭ সেশনের শিক্ষার্থী দানিয়েল, যিনি প্রশ্নফাঁস মামলায় ছয় মাসের সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। একই সঙ্গে ২০২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসানও রয়েছেন, যিনি মাদকসেবনের অভিযোগে পূর্বে শোকজ নোটিশ পেয়েছিলেন। এছাড়া ঘটনাটিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ২০১৫–১৬ সেশনের মিজবাহ এবং ২০২১ ব্যাচের মিরাজ নামের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও।

অভিযুক্ত অধিকাংশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদকসেবন ও বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।

শেকৃবি শাখা ছাত্রদল সভাপতি আহমেদুল কবীর তাপশ বলেন, মারুফ, ফরহাদসহ যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের বিষয়ে নানাধরনের অভিযোগ ইতোপূর্ব থেকেই ছিল। যদিও একসময়ে তারা ছাত্রদলের সঙ্গে চলাফেরা করত, তবে বহু পূর্ব থেকে তারা ছাত্রদলের ব্যানারের বাইরে গিয়ে নিজস্বস্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে যা ছাত্রদলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীকে মারধরের এই অপ্রীতিকর ঘটনার দায়ভার কোনোভাবেই ছাত্রদল নেবে না বরং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পরামর্শসাপেক্ষে এই বিষয়ে ছাত্রদল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আরফান আলী জানান, ঘটনার খবর পেয়ে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে মিজবাহ, মারুফ ও ফরহাদকে পাই। জিজ্ঞাসা করলে তারা দাবি করে, ভুক্তভোগীরা আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। পরে তারা আরও কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে। তারা ক্যাম্পাসে ভয়ভীতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, যা প্রশাসন কোনোভাবেই সহ্য করবে না। ঘটনা তদন্তে পুলিশকে অবহিত করা হবে এবং প্রশাসনিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।