ঢাকা রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

৪৩ শিশুসহ ৭৯ বেসামরিক নিহত

কিন্ডারগার্টেন-হাসপাতালে আরএসএফের বর্বরতা

ভিনদেশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ০৩:১৭ এএম

সুদানের দক্ষিণ কর্দোফান প্রদেশে আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর চালানো এক ভয়াবহ ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৩ জনই শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৩৮ জন। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সুদান কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার পশ্চিম সুদানের কালোগি শহরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে চারজন নারীও রয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, আরএসএফের ড্রোন থেকে মোট চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা একটি কিন্ডারগার্টেন (শিশুবিদ্যালয়), একটি হাসপাতাল এবং শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে। রাজ্য সরকার এ ঘটনাকে আরএসএফ-সমর্থিত সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থ দ্বারা সংঘটিত একটি ‘জঘন্য অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। প্রথমদিকে রাজ্য সরকার জানায়, হামলায় ছয় শিশু ও এক শিক্ষকসহ মোট আটজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে পরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৯ জনে পৌঁছায়। দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্য সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এসব সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, আরএসএফকে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং তাদের মিত্রদের এই ‘অমানবিক অপরাধের’ জন্য জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। এক বিবৃতিতে হামলাটিকে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের এক ভয়াবহ উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

ইউনিসেফ জানায়, নিহতদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ বছর বয়সি ১০ জনেরও বেশি শিশু রয়েছে। আনাদোলুর খবরে বলা হয়, গত মাসে উত্তর ও দক্ষিণ কর্দোফানে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার কারণে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে। উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে, যার ফলে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। সুদানের মোট ১৮টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলের দারফুর অঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যই বর্তমানে আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে, কেবল উত্তর দারফুরের কিছু অংশ সেনাবাহিনী দখলে রেখেছে। অন্যদিকে দেশের দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের বাকি ১৩টি রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যার মধ্যে রাজধানী খার্তুমও অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে শুরু হওয়া এই গৃহযুদ্ধ ইতোমধ্যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ হাজার মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।