ঢাকা রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

কারাবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান সরকার

ভিনদেশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ০৩:১৯ এএম

পাকিস্তান সরকার কারাগারে বন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সব ধরনের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করেছে। তিনি রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। শুক্রবার দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি ইমরান খানকে ‘যুদ্ধ-উন্মাদনায় মগ্ন চরমপন্থি’ বলে মন্তব্য করেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী ইমরানকে ‘মানসিক রোগী’ ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপরই সরকার হঠাৎ করে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। তথ্যমন্ত্রী তারার জানান, এখন থেকে কোনো ব্যক্তি-রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী বা পরিবারের সদস্যÑ কেউই ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। কেউ জোর করে দেখা করতে চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সরকার জানায়, কারাগারে বসে ‘রাষ্ট্রবিরোধী এজেন্ডা’ চালানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। দুই দিন আগে ইমরানের সঙ্গে তার বোন উজমা খান দেখা করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, সেনাপ্রধান অসীম মুনিরের কার্যক্রমে ইমরান অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ৭৩ বছর বয়সি ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ ছিল না। ফলে সমালোচনা ও পিটিআইয়ের আন্দোলনের ডাক বাড়তে থাকে। সেই চাপের মুখেই তার বোনকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তান আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, ‘কারাবন্দি ইমরান খানের বক্তব্য এখন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’  গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, তিনি (ইমরান খান) কারাবন্দি অবস্থায় থেকেও মনে করেন, যদি তিনি ক্ষমতায় না থাকেন, তা হলে দেশে কিছুই চলবে না। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও কারাবন্দি ইমরান খানকে উদ্দেশ করে জেনারেল আহমেদ শরীফ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির রাজনীতি শেষ। তিনি নিজের অহংকার ও আবেগেই বন্দি হয়ে আছেন।’ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগ করে আইএসপিআর ডিজি বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসীদের বিদ্রোহ থেকে জনগণকে রক্ষা করার জন্য সেনাবাহিনী রয়েছে। আহমেদ শরীফ আরও বলেন, ওই ব্যক্তি (ইমরান খান) জনগণকে বিদ্যুৎ বিল না দিতে এবং প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বন্ধ করতে উসকানি দিয়েছেন। এমনকি আর্মির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। পাকিস্তান আর্মির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বক্তব্য কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।  সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ বলেন, সেনাবাহিনী কোনো আঞ্চলিকতা, ধর্মীয় ভাবধারা বা রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী নয়। কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা আমরা অনুসরণ করি না। ব্যক্তিগত উচ্চাকাক্সক্ষাকে রাষ্ট্রের ওপরে তুলে ধরা হচ্ছেÑ এখনই সেই নেতিবাচক বর্ণনার অবসান ঘটাতে হবে। আইএসপিআর মহাপরিচালক অভিযোগ করেন, কারাবন্দি ওই রাজনৈতিক নেতা এনডিইউ-তে কোর্স করা নিজের কর্মীদেরই দেশদ্রোহী বলেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে ও বিভাজন সৃষ্টি করতে সক্রিয়। তিনি আরও বলেন, মূল বক্তব্যটি দিচ্ছে একজন মানসিকভাবে অস্থির ব্যক্তি, আর বিশ্বজুড়ে থাকা কিছু সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক সেই কথাগুলোই প্রচার করছে।