পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনসের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লে. জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সেনাবাহিনীবিরোধী বক্তব্য তৈরি ও ছড়িয়ে দিচ্ছেন, যা রাজনীতির সীমানা ছাড়িয়ে এখন ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকিতে’ পরিণত হয়েছে। তার এই মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কোনোভাবেই ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’ নন। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সাংবিধানিক সংশোধনী পাসের পর দেশটিতে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছে পিটিআই। পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী ডিজিআইএসপিআরের মন্তব্যকে ‘অনুচিত ও ভুল’ আখ্যা দিয়ে বলেন, একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য গণতন্ত্রের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, ‘আমাদের শত্রুরা চায় আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলি।’ গোহর অভিযোগ করেন, কিছু পক্ষ প্রধান রাজনৈতিক দল ও সামরিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘বড় ধরনের বিপর্যয় শুরু হয় কয়েকটি অনুপযুক্ত কথার মাধ্যমেই।’ তাই অহং ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও ইতিবাচক পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, এখনো পরিস্থিতির উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ভাষার তীব্রতা কমাতে হবে।
একই সঙ্গে ইমরান খানের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকে যেন কোনো বাধা না দেওয়া হয় এবং তার বোনদের সঙ্গে সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে যেন কোনো রাজনীতি না হয়Ñ সেটিও তিনি উল্লেখ করেন। গোহর বলেন, দেশ উন্নতি ও অগ্রগতি পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বর্তমান উত্তেজনা চলতে থাকলে ‘এটা মাইনাস-ওয়ান নয়, মাইনাস-এভরিওয়ানে’ গিয়ে ঠেকবেÑ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই গোহর বলেন, আজকের ব্রিফিংটি ‘একটু আলাদা’ হবে এবং প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পরিবর্তে জনসাধারণকে সত্য জানানোই এর উদ্দেশ্য। তিনি দাবি করেন, পিটিআই দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল, আর দলটির নেতা ইমরান খানের প্রতি ৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। ‘আমাদের ওপর যা ঘটেছে তা জনগণকে জানানো জরুরি। ১৮০ আসন থেকে আমরা নেমে এলাম ৯১-এ, এখন ৭৬-এ। সংরক্ষিত আসন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
নারী-শিশুর ওপরও সহিংসতা হয়েছে। এদিকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসফের (পিটিআই) আরও ১৩২ নেতার বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালের ৯ মের ভাঙচুর-সহিংসতার মামলায় তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। গত শনিবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক অস্থিরতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে ফেডারেল সরকার অভিযুক্তদের ওপর নজরদারি আরও কঠোর করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের নাম ইসিএলে তোলার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান, শাহ মাহমুদ কোরেশি, ওমর আয়ুব, ফাওয়াদ চৌধুরী ও শিবলি ফারাজের নামও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

