সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ১২:৩৩ এএম

ডলারের সরবরাহ বেশি, দাম কমে আসছে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ১২:৩৩ এএম

ডলারের সরবরাহ বেশি, দাম কমে আসছে

মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান এক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর ফলে বাজারে ডলারের দাম কমেছে ২ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা বলছেন, এই পতনের মূল কারণ বাজারে ডলারের চাহিদা কমে আসা এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধি। গতকাল রোববার বেশ কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলারের জন্য সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত রেট দেয়। কেউ কেউ ১২০ টাকা ৬০ পয়সায় প্রতি ডলার কিনলেও বেশির ভাগ ব্যাংক দিন শেষে ১২০ টাকার বেশি দিতে রাজি হয়নি। অথচ গত সপ্তাহের শুরুতে রেমিট্যান্সের ডলারের দর ছিল ১২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত। সেই হিসাবে এক সপ্তাহে ডলারের দরপতন হয়েছে ২ টাকা ৯০ পয়সা।
জানা যায়, গত ডিসেম্বরের শুরু থেকে ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। মাত্র দুই কার্যদিবসে ডলার-টাকার বিনিময় হার দুই দফা রেকর্ড ভেঙে ১২৮ টাকায় পৌঁছায়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ডলারের দর কমে আসে। তখন অস্বাভাবিক দামে রেমিট্যান্স কেনার অভিযোগে ১৩টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। সে সময় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, কয়েকটি ব্যাংকের অপরিণত সিদ্ধান্তে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো ইচ্ছেমতো দর বাড়াচ্ছে, যা বরদাশত করা হবে না। ডলারের দাম ঠিক হবে বাংলাদেশের ভেতরে। পরে চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থায় চলে যায়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের মধ্যে দর ঠিক করে ডলার লেনদেন করতে পারে, যা আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী। এর পর থেকেই ডলারের দর কমা শুরু হয়।
ব্যাংকাররা জানান, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ডলারের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অনেক ব্যাংক এখন ডলার ধরে রাখতে না চেয়ে বরং বিক্রি করে দিতে চাইছে। আমদানি এলসি কমে যাওয়া এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ার ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে বলেই তারা মনে করছেন।
একসময় বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো থেকে ডলার কেনার জন্য ব্যাংকগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ত। এখন উল্টো চিত্র। ডলার সরবরাহ বাড়ায় অনেক ব্যাংকই আগ্রহ হারাচ্ছে বেশি দামে কিনতে। এক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসের কর্মকর্তা জানান, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ডলারের দর আরও কমতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের সরবরাহ বাড়ার ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর ফলে আমদানির খরচ কমবে এবং মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। একসময় ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে হিমশিম খেত, কিন্তু এখন ডলারের জোগান স্বাভাবিক থাকায় সেই চাপ নেই। এ ছাড়া খোলাবাজার ও ব্যাংকের মধ্যে ডলারের দামে পার্থক্য কমে এসেছে, যা বাজারে স্থিতিশীলতা আনছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংকগুলোর কাছে এখন ডলারের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক কম। রেট কমার প্রবণতায় অনেক ব্যাংক ডলার ধরে রাখতে চাইছে না, বরং বিক্রির চেষ্টা করছে। মূলত আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ কম আর রেমিট্যান্স ও রপ্তানির ইনফ্লো ভালো থাকায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে গেছে।
গত কয়েক বছরে সরবরাহের তুলনায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেশি ছিল। বিশেষ করে সরকারি আমদানির অনেক পেমেন্ট বকেয়া ছিল, যার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ডলারের প্রয়োজন হতো। একইভাবে, বেসরকারি খাতেও অনেক এলসির পেমেন্ট বাকি ছিল। ফলে ডলারের দর বাড়লে দ্রুত পরিশোধে আগ্রহ বাড়ে, যা বাজারে চাপে ফেলেছিল।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতি মাসেই ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে। এমনকি এক মাসে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স আসে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ওই অর্থবছরের প্রতি মাসে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের কম রেমিট্যান্স আসে। সে তুলনায় সদ্য বিদায়ি বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ বেড়েছে। এদিকে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক ডলারের বিনিময় হার চালু করে, যা আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী গৃহীত। এই নীতির পর থেকেই ডলারের দাম ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। বিগত বছরগুলোতে সরবরাহের তুলনায় ডলারের চাহিদা বেশি ছিল। সরকারি আমদানি বিলের ব্যাকলগ থাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ওপর ডলার কেনার চাপ ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বর্তমান গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করে আমদানি বিল পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে তারা প্রায় সব দায় পরিশোধ করেছে। এখন রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো থাকায় ডলারের জোগান স্বাভাবিক এবং দরপতনের সম্ভাবনাই বেশি।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!