আবারও চালু হতে যাচ্ছে ‘অগ্রণী-দুয়ার ব্যাংকিং’ সেবা, যা দেশের লাখের অধিক গ্রাহক এবং হাজারো এজেন্ট ও স্টাফের জন্য স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে। গত ৮ জুলাই হাইকোর্ট এই নির্দেশ প্রদান করেন।
সূত্রমতে, গত ২০ জুন হঠাৎ করে সরকারি মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি একতরফাভাবে ‘অগ্রণী-দুয়ার ব্যাংকিং’ এজেন্ট সেবা বন্ধ ঘোষণা করে, ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০ লাখেরও বেশি গ্রাহক তাদের নিকটবর্তী ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হন এবং ৩ হাজারের অধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উদ্যোক্তা কর্মহীন হয়ে পড়েন।
এই হঠাৎ সেবা বন্ধের সিদ্ধান্তে দেশের বিভিন্ন স্থানে এজেন্টদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেক এলাকায় গ্রাহকেরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, এজেন্ট আউটলেট ঘিরে অস্থিরতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি লক্ষ করা যায়। গ্রামাঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবাহ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয় এবং শত শত গ্রামীণ উদ্যোক্তা ক্ষতির মুখে পড়েন।
এর আগে দুয়ার সার্ভিসেস পিএলসি বারবার অনুরোধ করেছিল, যাতে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়, যাতে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে একটি নতুন অর্থনৈতিক মডেল ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণের কাজ যৌথভাবে সম্পন্ন করা যায়। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা চলমান ছিল, যা সবার জন্য ফলপ্রসূ হতে পারত।
তবে অগ্রণী ব্যাংক আলোচনাধীন অবস্থাতেই হঠাৎ করে সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করে, যা অনেকেই দায়িত্বজ্ঞানহীন ও চুক্তি ভঙ্গ হিসেবে দেখেন। পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে গেলে দুয়ার সার্ভিসেস পিএলসি মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া শুরু করে এবং বিষয়টি পরে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
৮ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এক নির্দেশনায় অগ্রণী ব্যাংককে ‘অগ্রণী-দুয়ার’ ব্যাংকিং চুক্তি অনুযায়ী চলমান এজেন্ট সেবা (চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২১/০৬/২০২২ তারিখে) পুনরায় শুরু করতে কোনো বাধা সৃষ্টি না করার নির্দেশ দেন।
এই আদেশের ফলে দুয়ারের আওতাধীন সারা দেশের পাঁচ শতাধিক আউটলেট ও ৩ হাজারের বেশি কর্মী পুনরায় কাজে ফিরতে পারবেন, যা গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে দুশ্চিন্তায় থাকা ১০ লক্ষাধিক গ্রাহক আবারও তাদের সঞ্চিত অর্থ, জমা ও উত্তোলনের নিরাপদ ও সহজ সুযোগ ফিরে পাবেন, যা সার্বিকভাবে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও জনগণের আস্থাকে পুনরুদ্ধার করবে।
দুয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাইকোর্টের লিখিত আদেশ পাওয়ামাত্র তা অগ্রণী ব্যাংকে সরবরাহ করা হবে। এরই মধ্যে আইনজীবীর প্রত্যয়নপত্র ব্যাংকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছেÑ এই আদেশ লঙ্ঘন আদালত অবমাননার আওতাভুক্ত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :