ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের আর্থিক যোগ্যতা নিশ্চিত করতে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণসংক্রান্ত তথ্য দ্রুত হালনাগাদ করার কড়া নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি)। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, কোনো ঋণগ্রহীতা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পেলেও তার ঋণের প্রকৃত অবস্থার তথ্য সিআইবিতে অপরিবর্তিতভাবে রিপোর্ট করতে হবে। তথ্য গোপন বা ‘ইচ্ছামতো’ সুবিধা দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।
গত ২৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিআইবি কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করে। বৈঠকে নির্বাচনের আগে ঋণের তথ্য হালনাগাদ সম্পন্ন করার এবং কোনো ঋণখেলাপিকে যেন প্রার্থী হতে না দেওয়া হয়Ñ এ-সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়। একটি বেসরকারি ব্যাংকের সিআইবি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে কোনো ঋণখেলাপিকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেবে না সরকার।’
পুনঃতপশিলে কোনো ছাড় নয়
দীর্ঘদিন খেলাপি থাকা ঋণগ্রহীতারা নির্বাচনের আগে পুনঃতপশিলের চেষ্টা করলে নিয়মকানুন কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ধরনের ছাড়, বিশেষ সুবিধা বা নিয়ম ভঙ্গ করে পুনঃতপশিলের সুযোগ থাকবে না।
মাসিক রিপোর্ট বাধ্যতামূলক
যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখনো খেলাপি তথ্য সিআইবিতে জমা দেয়নি, তাদের দ্রুত রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। মাস শেষে ঋণের স্থিতির ওপর ভিত্তি করে নতুন ও চলমান ঋণের সম্পূর্ণ হালনাগাদ তথ্য প্রতিবেদন আকারে পাঠাতে হবে। ব্যাংকগুলোকে বিশেষভাবে যেসব তথ্য হালনাগাদ করতে বলা হয়েছেÑ চলমান ও পরিশোধিত ঋণের হিসাব, সঠিক ঋণস্থিতি ও শ্রেণিমান, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, ওভারডিউ স্থিতি, খেলাপি কিস্তির সংখ্যা ও পরিমাণ, কিস্তি জমা বা আদায়ের তথ্য।
শাখায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগ
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঋণ সম্পর্কিত তথ্য যাচাইয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে প্রতিটি শাখায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের নাম ও মোবাইল নম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে হবে।
নির্বাচনি বিধি
নির্বাচনি আইনে বলা আছেÑ মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর ব্যাংক ঋণ ‘রেগুলার’ না থাকলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কঠোর উদ্যোগ নির্বাচনের আগে ঋণখেলাপিদের মনোনয়ন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

