বগুড়ায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। এ সময় ছুরিকাঘাতে ছাত্রীর দাদি ও ভাবি ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। অভিযুক্ত তরুণের নাম সৈকত হোসেন (১৯)। গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুর হরিগাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে শহরের খান্দার এলাকায় পাসপোর্ট অফিসের পাশে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেপ্তার সৈকত হাসান বগুড়া শহরের ইসলামপুর হরিগাড়ী এলাকার সোহেল ইসলামের ছেলে।
নিহতরা হলেন ওই এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুস বুলুর স্ত্রী লাইলী বেওয়া (৮৩) এবং পারভেজ ইসলামের স্ত্রী হাবিবা ইয়াসমিন (২১)। হাবিবা লাইলী বেওয়ার নাতি পারভেজ ইসলামের স্ত্রী। সম্পর্কে তারা দাদিশাশুড়ি ও নাতবউ। এ ঘটনায় আহত কিশোরী সম্পর্কে পারভেজের ছোট বোন। বর্তমানে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল বাহার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে সৈকত নানা কৌশলে আত্মগোপনে ছিল। অবশেষে তাকে ধরা হয়েছে। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বজনরা জানান, সৈকত দীর্ঘদিন ধরে কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করত এবং বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। সে এলাকায় মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। ওই কিশোরীর পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ জানালে সৈকত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বুধবার রাতে সৈকত ও তার সঙ্গে থাকা আরও ৭-৮ জন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তাকে বাধা দিতে এলে প্রথমে হাবিবাকে, পরে লাইলী বেওয়াকে হত্যা করে। কিশোরীর চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক লাইলী বেওয়া ও হাবিবাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, নিহত দুজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক জখমের চিহ্ন ছিল। কিশোরীর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আহত কিশোরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।