ঢাকা শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গাজীপুরে বাড়ল একটি, কমেছে বাগেরহাটে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১২:০২ এএম
গাজীপুর
  • ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন 
  • প্রকাশ হবে গেজেট আকারে
  • সর্বমোট আপত্তি এবং সুপারিশ আবেদন এসেছে ১ হাজার ৮৯৩টি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের চূড়ান্ত সীমানার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সীমানার ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হবে আগামী নির্বাচন। এবার গাজীপুরে একটি বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাটে একটি কমিয়ে তিনটি আসন রাখা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।

নির্বাচন সামনে রেখে সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত বিশেষায়িত কমিটি কাজ করে। তারপর ৩০০ আসনের সীমানার খসড়া ৩০ জুলাই প্রকাশ করে ইসি।

দ্বাদশ সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করা হয়। পরিবর্তনের মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়। সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তি জানাতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।

সচিব জানান, সর্বমোট আপত্তি এবং সুপারিশ আবেদন এসেছে ১ হাজার ৮৯৩টি। ১০ আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন সম্পর্কিত ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি পরামর্শ বা সুপারিশ পাওয়া গেছে। পক্ষ ও বিপক্ষ উভয় দিক থেকেই মতামত এসেছে। মূলত আপত্তিটা আগে শোনে ইসি।

২৪-২৭ আগস্ট টানা চার দিন প্রস্তাবিত নির্বাচনি এলাকার সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তি ও আবেদনের ওপর শুনানি শেষ করে নির্বাচন কমিশন সচিব বলেছিলেন, পর্যালোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সীমানার বিষয়ে ২৬০টি দাবি আপত্তির ওপর শুনানি:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত বুধবার চতুর্থ দিনে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের ১২ জেলার ১৮টি আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ২৬০টি দাবি আপত্তির ওপর শুনানি গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তি করেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।

সব মিলে বিগত চার দিনের সর্বমোট ১ হাজার ৮৯৩টি দাবি আপত্তির ওপর ইসি শুনানি গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করে এবং দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর-১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। 

শুনানিতে সংসদীয় আসনের সীমানার দাবি ও আপত্তি নিয়ে আবেদনকারী ও তাদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানি করেন। দাবি ও আপত্তির বিষয়ে ইসি উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন এবং আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে সমাধানের আশ্বাস দেন। শুনানি শেষে পাবনার প্রতিনিধি ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন বলেন, আমরা শুধু সাঁথিয়া উপজেলা নিয়ে পাবনা-১ আসন চাই। একই সঙ্গে বেড়া ও সুজানগর নিয়ে পাবনা-২ আসন চাই। এই দুইটি আসন বিন্যাসের প্রস্তাবনা ২০১৮ সালে ছিল কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জের আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলায় ২০০১ সাল পর্যন্ত সাতটি আসন ছিল। ২০০৮ সালে একটি আসন কমিয়ে ছয়টি আসন করা হয়। আমাদের দাবিÑ আগে চৌহালী উপজেলা ও শাহজাদপুর উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের চারটা ইউনিয়ন মিলে যে সিরাজগঞ্জ ছয় আসন ছিল, সে আসনটা আমরা ফিরে পেতে চাই।

এর আগে মঙ্গলবার তৃতীয় দিনে ঢাকা অঞ্চলের ছয় জেলার ২৮টি সংসদীয় আসনের সীমানার বিষয়ে দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তিসংক্রান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন ইসির পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ২৫৯টি আপত্তি এবং ৫০টি পরামর্শসহ মোট ৩০৯টি আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করা হয়।

১৮টি সংসদীয় আসনের বিষয়ে দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি:

গত রোববার প্রথম দিনে কুমিল্লা অঞ্চলের ছয়টি জেলার ১৮টি সংসদীয় আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করেছে ইসি। ওই দিন ইসির পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ৪২৯টি আপত্তি এবং ৩৮২টি পরামর্শসহ মোট ৮১১টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

অপর দিকে সোমবার দ্বিতীয় দিনে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২০টি আসনের সীমানা নিয়ে দাবি আপত্তির ওপর শুনানি গ্রহণ করেছে ইসি। ওই দিন ৯ জেলার সীমানা নিয়ে ৫১৩ আবেদন নিষ্পত্তি করেছে ইসি।

গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৩টি আসনের সীমানা নিয়ে ১ হাজার ৭৬০টি দাবি-আপত্তি জমা পড়ে ইসিতে। এগুলো নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে ইসি। সেপ্টেম্বরে ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।