জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানস্থলে বিশৃঙ্খলার জন্য ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী’ জড়িত বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কেউ থাকতে পারে না। একইসাথে তিনি বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্রে ভারসাম্য আসবে। জুলাই সনদে কিছু দল স্বাক্ষর করেনি, এর প্রভাব আগামী জাতীয় নির্বাচনে পড়বে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, আগামী নির্বাচনে এটা বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না।
গতকাল শনিবার জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার জানা মতে, এনসিপি এবং চারটি বাম রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যেতে পারেনি। বলব না, স্বাক্ষর করেনি। স্বাক্ষর করার সুযোগ উন্মুক্ত আছে। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে সনদে স্বাক্ষর করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, সহনশীলতা সবার মধ্যে আসবে। হয়তো তাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে। সেটা সরকারের সঙ্গে আলাপ করবে। এক পর্যায়ে তারাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর গণতন্ত্রের মধ্যে তো সবাই একমত হবে এমন তো নয়। সেটা উন্মুক্ত আছে। ভিন্ন মত থাকতেই পারে।
সবাইকে আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা ধৈর্য, সহনশীলতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে যেন এগিয়ে যাই। তাহলে সত্যিকার অর্থে একটি কার্যকর শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে পারব। আমাদের শহীদের আত্মত্যাগ এবং রক্তদান সফল হবে।
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের ঐতিহাসিক দিন গত শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়েছে। জুলাই সনদে মধ্যে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি যোদ্ধাদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, জুলাই যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের সঙ্গেও কথা বলেছিল। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল। সেই যৌক্তিক দাবিটা পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, কথা বলেছিলাম। ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রিয়াজ বিষয়টি সঠিকভাবে এড্রেস করেছেন, সেটা প্রেসে বলেছেন এবং সংশোধন করেছেন। এরপরও তাদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়। যেসব বিশৃঙ্খলা হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এটা তদন্তনাধীন। দেখা গেছে, এখানে জুলাই যোদ্ধাদের নামে কিছুসংখ্যক ছাত্র নামধারী, কিছুসংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী যে এখনো সব জায়গায় বিভিন্ন ফাঁক-ফোকরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেটা গতকালকেও দৃশ্যমান হয়েছে। আমার মনে হয়, এখানে এটির সঙ্গে কোনো সঠিক কোনো জুলাই যোদ্ধা বা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ড. মো. মোরশেদ হাসান খান, সদস্য সচিব কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সদস্য আমিরুল ইসলাম কাগজীসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
