জামায়াতে ইসলামী মানেই ইসলাম ধর্ম নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী মানে পূজার সময়, পূজাম-পে গিয়ে গিতা পাঠ করা। জামায়াতে ইসলামী হিন্দুদের নিয়ে একটা শাখা গঠন করেছিল। পরে আবার সেটা বাতিল করেছে। এখন আবার এনসিপির স লেগেছে। সেটা নিয়ে আরেক নোংরামি শুরু হয়েছে।’ গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী চালকদলের মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ লড়াই-যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। এক প্রজন্মের পর আরেক প্রজন্ম এসে হাজির হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না। ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনে স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছে, কিন্তু এখনো দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলমান। কারণ এখনো ভাত-ভোটের অধিকারের জন্য, বিপথগামী কিছু রাজনীতিবিদের খপ্পর থেকে বাঁচার জন্য দেশের মানুষ সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা দেখতে পাচ্ছেন মুখে এক এবং মনে আরেক কথা বলছে একটি রাজনৈতিক দল এবং কাজ করছে আরেক রকম। একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। ওদিকে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে এসেছে।’
আজ আবার তরুণদের যে দল এনসিপি, তারা আবার বলেছে, জামায়াতে ইসলামী নাকি প্রতারক। আবার জামায়াতে ইসলামী বলেছে, নাহিদ ইসলামের বক্তব্য কাক্সিক্ষত নয়, মন্তব্য করেন আলাল।
আলাল বলেন, ‘আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ শুধু ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করেনি; শুধু খেয়ে-পরে বেঁচে থাকবে, ভোটের প্রয়োজন নেই; এ জন্যও লড়াই করেনি। লড়াইটা ছিল বিভিন্ন প্রত্যাশার মিলন। দুই রকম চাওয়া আর প্রাপ্তি যেটা, সেটার একটা সমীকরণ। এ লড়াইতে যারা জীবন দিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, প্রত্যেকে আমাদের জাতীয় জীবনে চিরদিনের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আদর্শের মতভিন্নতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হচ্ছে ফুলের বাগান, শুধু একটি ফুল নয়। এই ফুলের বাগান গড়ে তোলার জন্য আমরা দেশে আন্দোলন করেছি। আমাদের সঙ্গে অনেকগুলো বন্ধু সংগঠন ছিল। তারাও আন্দোলন করেছে। সবশেষে তরুণ বন্ধুরা, কিশোর বন্ধুরা, শ্রমজীবী মানুষ, বোনেরা, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের বুদ্ধিজীবী, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ সবাই মিলে রাস্তায় এসেছিল। যার ফলে আজ বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে।’
এই মতভিন্নতাকে যদি হিংসার দিকে, উগ্রতার দিকে পরিচালিত করা হয়, তাহলে আবার যে তারা (আওয়ামী লীগ) ফিরে আসবে না, এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন। একই সঙ্গে তারেক রহমান যেন অবিলম্বে দেশে ফিরে হাল ধরেন, এই প্রত্যাশা কামনা করেন আলাল। মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজীসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
