* ‘ইসলামী বাংক কিংবা ইবনে সিনার সঙ্গে জামায়াতের মালিকানার সম্পর্ক নেই’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিএনপির ৩৬ দফার পর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ১৮ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট চাইলেও জামায়াত নভেম্বরে গণভোটের প্রস্তাব জানিয়েছে চিঠিতে। এদিকে জোটের ভোটে প্রতীক ব্যবহারের ক্ষেত্রে দলগুলোর স্বাধীনতা চেয়েছিল বিএনপি। জামায়াত তার বিরোধিতা করে জোটের ক্ষেত্রে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার পক্ষে মত দিয়েছে এবং ইসির কাছে এই বিধান বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এর আগে দুপুর ১২টার পর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার ও মতিউর রহমান আকন্দ বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি, গণভোট আলাদা হতে হবে। কারণ দুটি বিষয়। একটা হচ্ছে, আমাদের কতগুলো রিফর্মস আছে। এটা ইলেকশন যখন হোক, ইলেকশন যেভাবে হোক, তার বাইরে এটা জাতির জন্য একটা স্থায়ী রিফর্মসের বিষয়। যেহেতু এটা একটা আলাদা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই আলাদা গণভোটের মাধ্যমেই এটার ওপর মত গ্রহণ করা উচিত। এটা আমরা জোর দিয়েই বলেছি। এ ক্ষেত্রে যে প্রস্তুতি দরকার, আমরা রিকোয়েস্ট করেছি, যদি ন্যাশনালি সিদ্ধান্তটি হয় আলাদাভাবে হবে, যেটা আমরা চাইছি।
জামায়াত নভেম্বরে গণভোট চায়। আমরা অনেকগুলো দল চাইছি এটি ইনডিপেন্ডেন্টলি হোক। কারণ হচ্ছে, একসঙ্গে যদি হয়, কয়েকটি সমস্যা হতে পারে। প্রথম সমস্যা হচ্ছে, প্রতিটি দল তখন তার জাতীয় নির্বাচনের প্রতীককে বিজয়ের জন্যই ভেরি সিরিয়াস থাকবে। সবার মাথায় কাজ করবে দুই ইলেকশন যদি কোনো জায়গায় দখল হয়ে যায়, তাহলে একটার সঙ্গে আরেকটার ভাগ্য অন্যভাবে জড়িত হয়ে যাবে। কোনো কারণে ইলেকশন যদি কোনো জায়গায় স্থগিত হয়ে যায়, তাহলে এটা স্থগিত হয়ে যাবে মানে কোনো রেজাল্ট আসবে না। কিন্তু দুটি একেবারে ভিন্ন ন্যাচার; একটা হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন জনপ্রতিনিধি করার জন্য আর এর জন্য সবার একটা রিফর্ম জরুরি।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোট অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে জামায়াত। জুলাই মাসে তৈরি জাতীয় সনদে বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোকে পরিবর্তন করে যে সংস্কারগুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে, সে সম্পর্কে জাতিকে জানতে হবে। এ ছাড়া একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে নির্বাচন কেন্দ্রে সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে, দু-চারটা কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হলে গণভোটের দশা কী হবেÑ এমন টেকনিক্যাল সমস্যা আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ইসিকে অবশ্যই ‘জুলাই সনদ’ ও সংস্কারের বিষয়গুলো পাবলিক করতে হবে, যাতে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। গণভোট আয়োজনে ইসির পক্ষ থেকে কোনো চ্যালেঞ্জ বা অক্ষমতার কথা জানানো হয়নি।
বিএনপির পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা বলেন, তারা যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বলেছে, তার কোনো একটার মালিকানার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পর্ক নাই। তারা এটিকে ব্যাড ট্র্যাডিশন আখ্যা দিয়ে বলেছে, পাল্টা বিবৃতি বা তালিকা দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়। তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু ন্যাচার ভিন্ন, আমরা স্পষ্ট সরকারকে বলেছি, কমিশনকে বলেছি। ইলেকশন কমিশনে আমরা বলেছি এটা আলাদা করার জন্য।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন