ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই, ২০২৫

ফের বন্ধের ঘোষণা প্রাথমিকের ‘মিড ডে মিলের’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
শিক্ষার্থীদের দুপুরের পুষ্টিকর খাবার পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত দুই মাস। ছবি- সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চলতি জুলাই মাসেই চালু হওয়ার কথা ছিল দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বহু প্রতীক্ষিত ‘মিড ডে মিল’ কর্মসূচি।  কিন্তু টেন্ডার জটিলতায় ফের স্থগিত হয়ে গেল সেই উদ্যোগ। 

এর ফলে দেশের ৮ বিভাগের ১৫০ উপজেলার ৩১ লাখেরও বেশি কোমলমতি শিক্ষার্থীকে দুপুরের পুষ্টিকর খাবার পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত দুই মাস।

সরকার এখন আগামী সেপ্টেম্বর থেকে প্রকল্পটি চালুর পরিকল্পনা নিচ্ছে। তবে নির্ধারিত সময়েও খাবার মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত এই ‘স্কুল ফিডিং’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে দেশের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এ কর্মসূচির আওতায় আসবে। সফল বাস্তবায়ন হলে পর্যায়ক্রমে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ও যুগ্ম সচিব হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করতে কাজ করছি। টেন্ডার কার্যক্রম আগামী অক্টোবর নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করছি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেপ্টেম্বরেই শিক্ষার্থীদের হাতে খাবার পৌঁছে দিতে পারব।’

তিনি আরও জানান, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। সে কারণে সব প্রক্রিয়া সতর্কভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে।’

প্রকল্পের আওতায় সপ্তাহে পাঁচ দিন শিক্ষার্থীদের স্কুল চলাকালীন সময়ে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হবে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে বনরুটি, সিদ্ধ ডিম, ইউএইচটি দুধ, ফরটিফাইড বিস্কুট এবং মৌসুমি ফল বা কলা।

রোব, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার পরিবেশিত হবে বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম; সোমবার বনরুটি ও দুধ এবং বুধবার থাকবে বিস্কুট ও মৌসুমি ফল। প্রতিটি বনরুটির ওজন ১২০ গ্রাম, ডিম ৬০ গ্রাম, দুধ ২০০ গ্রাম, বিস্কুট ৭৫ গ্রাম এবং ফল ১০০ গ্রাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই মিড ডে মিল শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ক্ষুধা নিবারণ করবে, মনোযোগ বাড়াবে এবং শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে প্রাথমিক স্তরে ঝরে পড়ার হারও কমবে।

৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার এ প্রকল্পে প্রায় ৯৭ শতাংশ ব্যয় ধরা হয়েছে খাবার সরবরাহে। শুধু ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্যই বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকার বেশি।

উপজেলা পর্যায়ে এ কর্মসূচি মনিটরিংয়ের জন্য ইউএনও’র নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টরা রয়েছেন।

সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রশিক্ষণেও গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে ১৯২টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হবে। এতে অংশ নেবেন প্রায় ১৯ হাজার ৭১৯ জন।