ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

মামলা তুলে নিতে চান কুমিল্লার সেই নারী

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৩:৪৬ পিএম
সম্মান ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য ভুক্তভোগী নারীর ছবি অষ্পষ্ট করে দেওয়া হলো। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনায় দায়ের করা মামলা এখন তুলে নিতে চান ভুক্তভোগী ওই নারী। রোববার (২৯ জুন) রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এ কথা বলেন তিনি।

ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি মারুফ খান।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে ভুক্তভোগী ওই নারীকে ঘরের মধ্যে বিবস্ত্র করে মারধর করে বেশ কয়েকজন। ঘটে ধর্ষণের ঘটনাও। এমনকি ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে আবার ৫১ সেকেন্ডের সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমন ঘটনায় শুরু হয় তোলপাড়।

ঘটনাটি ঘটে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে। ঘটনার পর শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগে বলা হয়, প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী নামের এক ব্যক্তি তার বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।

এরপর অভিযান চালিয়ে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তবে এখন ভুক্তভোগী ওই নারী রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তিনি মামলা আর চালিয়ে নিতে চান না। মামলা তুলে নিতে চান।

মামলা তুলে নিতে কেউ তাকে চাপ প্রয়োগ করেনি এমনকি টাকার লোভও দেখায়নি বলে জানান ওই নারী। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক কারণে ও সামাজিক চাপে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।’

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তিনি তাকে বলেছেন, সম্মান তো চলেই গেছে এখন মামলা করলে কি সেই সম্মান ফিরে আসবে? আসবে না।

ওই নারী বলেন, ‘মামলা করছিলাম ভালার লাইগা। অহন জামাইয়ে না করে। মামলাটা যখন করছি জামাই আমার লগে রাগারাগি কইরা কথা বলে নাই। গেরামের লগেও বুঝতে পারি নাই। স্বামী এইসব শুইনা, দেইখা অহন ফোনই দেয় না।’

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল আসামি ফজর আলীর সঙ্গে ওই নারীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল এমন দাবি করেছে স্থানীয়রা। তারা বলছে, দীর্ঘদিন ধরে ফজর আলীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। এই সুবাদে টাকার লেনদেনও করতেন ওই নারী।

তবে এমন দাবি অস্বীকার করেছেন ভুক্তভোগী নারী। তিনি জানান, ফজর আলীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক ছিল না, তবে তার সঙ্গে তিনি টাকা লেনদেন করতেন। টাকা-পয়সা নিয়েই কথা বলতেন। টাকা নিয়েই ছিল সম্পর্ক।’