ভারতের কাছে স্থগিত সিন্ধু নদ চুক্তি পুণর্মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পানিসম্পদ মন্ত্রনালয় সিন্ধু নদ চুক্তির আওতায় পানি প্রবাহ পুনবর্হালের জন্য আবেদন করে চিঠি পাঠায়েছে নয়া দিল্লির কাছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য ভারতকে একটি চিঠি লিখেছে পাকিস্তান।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি, সিন্ধু পানি চুক্তির অধীনে তাদের ভূখণ্ডে নদীগুলির প্রবাহ পুনরায় চালু করার জন্য পাকিস্তানের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় নয়াদিল্লিকে একটি চিঠি লিখেছে।
সিন্ধু পানি চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ জলবণ্টন চুক্তি যা ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে।এই চুক্তি অনুসারে, পশ্চিমের তিনটি নদী, সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব পাকিস্তানের অংশ, এবং পূর্বের নদী - শতদ্রু, বিয়াস এবং রাভি ভারতের অংশ। ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পাকিস্তান-সমর্থিত আরেকটি সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ১৯৬০ সালের চুক্তি স্থগিত করার পর ভারত এই আবেদন জানায়।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে পানি ব্যবহার করছে ভারত।
অপারেশন সিঁদুরের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আদমপূর বিমানঘাটি পরিদর্শনের সময় বলেন,‘ভারতের জল ভারতের স্বার্থে প্রবাহিত হবে, এটি ভারতের স্বার্থে সংরক্ষণ করা হবে এবং এটি ভারতের অগ্রগতির জন্য ব্যবহৃত হব’।
‘ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস)’ এই পদক্ষেপকে অনুমোদন করেছে, যা ১৯৬০ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতার এই চুক্তি ভঙ্গ করেছে নয়াদিল্লি।
বিশ্বব্যাংকের সভাপতি অজয় বঙ্গ বুধবার (১৪ মে) বলেছিলেন যে সিন্ধু জল চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত বা পরিবর্তন করা যাবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে চুক্তিতে যেকোনো পরিবর্তনের জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই পারস্পরিক সম্মতি প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে ভারত চুক্তি স্তগিত নয় বরং একপ্রকার মূলতবী করার দাবি করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সরকারের অবস্থানকে আরও জোরদার করে বলেন, ‘সিন্ধু জল চুক্তি সদিচ্ছা এবং বন্ধুত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তান কয়েক দশক ধরে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এই মূল্যবোধগুলিকে পদদলিত করে আসছে’।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে পাকিস্তানি মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে ভারত চুক্তি স্থগিত করলে দেশের অভ্যন্তরে সংকট তৈরি হবে।
এসপ্তাহে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জলসম্পদ মন্ত্রী শ্যী সি,আর পাতিল, বিদ্যুৎ মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর, কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত হওয়ার পর থেকে, অমিত শাহ, পাতিল এবং মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে দুটি বৈঠক হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :