সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

ফ্রন্টেক্সের প্রতিবেদন সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশ সবার শীর্ষে বাংলাদেশ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

ফ্রন্টেক্সের প্রতিবেদন সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশ সবার শীর্ষে বাংলাদেশ

ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের জন্য সবচেয়ে ব্যস্ত ও বিপজ্জনক পথ হিসেবে আবারও সামনে এসেছে সেন্ট্রাল মেডিটেরিনিয়ান রুটের নাম। আর এই রুটে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী লিবিয়া হয়ে ইতালিতে ঢুকছে। ইউরোপে অভিবাসনের চলমান সংকটের প্রেক্ষাপটে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স। সংস্থাটির মতে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপে প্রবেশ করেছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশিরাই সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। 
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৭৫ হাজার ৯০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহিঃসীমান্ত অতিক্রম করেছে। ইউরোপীয় সীমান্তে অনিয়মিত অভিবাসনের সংখ্যা যদিও গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে, তবে বাংলাদেশি নাগরিকেরা এই সময়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ইউরোপে প্রবেশ করেছে। ফ্রন্টেক্স জানায়, মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট এখনো সবচেয়ে ব্যস্ত অভিবাসন পথ, যেখানে এই সময়ের মধ্যে ২৯ হাজার ৩০০ জন অভিবাসী প্রবেশ করেছে। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। এদের মধ্যে বিপুলসংখ্যকই লিবিয়ার উপকূল থেকে ইতালিতে পৌঁছায়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ইতালিতে পৌঁছেছে ২০ হাজার ৮০০ অভিবাসী। এটি গত বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, পশ্চিম বলকান, পূর্ব স্থলসীমান্ত এবং পশ্চিম আফ্রিকার রুটে আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে এই সময়ে ১১ হাজার ৩০০ জন শনাক্ত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমেছে। ফ্রন্টেক্স মনে করছে, ট্রানজিট দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও চুক্তির কারণে এসব রুটে আগমন কমেছে। 
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ইতালিতে ৩১ হাজার ৯৪৮ জন অনিয়মিত অভিবাসী এসেছে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩১১ জন বাংলাদেশি, যা মোট আগমনের ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশিদের পরে আছে ইরিত্রিয়া (৪ হাজার ৪৬১ জন) এবং মিশর (৩ হাজার ৭২৩ জন)। এরপর পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, গিনি, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, মালি ও আইভরিকোস্টের নাগরিকেরা রয়েছে। একই সময়ে ৫ হাজার ৫৭৫ জন সঙ্গীবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক ইতালিতে পৌঁছেছে, যেখানে পুরো ২০২৩ সালে সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৭৫২। 
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা গেছে ৭৬০ জন। অভিবাসীরা যেসব বিপজ্জনক সমুদ্রপথে যাত্রা করে, তা এখনো প্রাণহানির অন্যতম কারণ হয়ে আছে। যুক্তরাজ্যে প্রবেশের জন্য ইংলিশ চ্যানেল রুট ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসনের চেষ্টাও বেড়েছে ২৩ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এই পথে ৩৩ হাজার ২০০ জন ইংল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। তারা মূলত ফ্রান্স হয়ে এই রুটে যাত্রা করেছে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক ট্র্যাজেডি কমেনি। 
ফ্রন্টেক্স ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, এ সময় শুধু ভূমধ্যসাগরেই ৭৬০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছে। ট্রলারে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার সময় এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশিও রয়েছে। অভিবাসন ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে ফ্রন্টেক্সের প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তা ইউরোপের বিভিন্ন সীমান্তে মোতায়েন রয়েছেন। তবে পাচারকারী চক্রগুলো দ্রুত নতুন রুট তৈরি করতে পারায় সীম ন্তে নজরদারি কঠিন হয়ে পড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি নতুন পাইলট প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যার আওতায় প্যারিস ও লন্ডনের মধ্যে অভিবাসী বিনিময়ের ব্যবস্থা করা হবে। ইউএনএইচসিআর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও অধিকাংশ মানবাধিকার সংস্থা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলগুলো এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছেন। গতকাল রোববার সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে ছোট নৌকায় করে পৌঁছানো একজন অভিবাসীকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হবে এবং এর বিনিময়ে ফ্রান্সে থাকা একজন অভিবাসীকে গ্রহণ করবে যুক্তরাজ্য। তবে এ ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যে যেতে চাওয়া ব্যক্তিকে অনলাইনে ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করতে হবে এবং সেখানে যাওয়ার যথার্থ কারণ দেখাতে হবে। এই পরিকল্পনা এখনো ইউরোপীয় কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। 
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হলে এই উদ্যোগ বিপজ্জনক যাত্রার বিকল্প হিসেবে একটি সমন্বিত ও মানবিক অভিগমনের সুযোগ এনে দিতে পারে। এর ফলে আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকারও রক্ষা করা সম্ভব হবে। তবে এই আশাবাদী বক্তব্যের বাইরে অধিকাংশ এনজিও ও অভিবাসন সংস্থা এই উদ্যোগকে মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থি বলে অভিহিত করেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!