ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

বললেন আইন উপদেষ্টা দ্রুতই আবু সাঈদ হত্যার বিচার হবে

রংপুর ব্যুরো
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ০২:১৭ এএম

জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘শহিদ আবু সাঈদ তোরণ, মিউজিয়াম ও স্মৃতিস্তম্ভ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় শহিদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

পরে এক স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যার বিচার অবশ্যই হবে। তার বাবা জীবিত অবস্থায়ই সেই বিচার দেখে যেতে পারবেন। এই সরকারের আমলেই জুলাই হত্যার বিচার কার্যকর হবে।’

আলোচনা সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘রংপুর আর অবহেলার শিকার থাকবে না। এ বছরই ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামে ইপিজেড গড়ে তোলা হবে এবং চীনের সহায়তায় রংপুরে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. তানজীমউদ্দীন খান, বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, ডিআইজি আমিনুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী।

এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উদ্যোগে উপাচার্যের নেতৃত্বে পীরগঞ্জের বাবনপুরে শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কালো ব্যাজ ধারণ ও শোক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়, যা শহিদ আবু সাঈদ গেটে গিয়ে শেষ হয়। বিকেলে ক্যাফেটেরিয়ায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা কথায় কথায় তার বাবার মৃত্যুর কথা বলতেন। এর পরও তার বাবা হত্যার বিচার করতে সাড়ে তিন বছর সময় লেগেছে। আমরা সে শেখ হাসিনার আমলে বিচার করতে আসিনি। আমরা সারা পৃথিবীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন একটি বিচার করতে চাই। আমরা আশাবাদী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলে আবু সাঈদ হত্যাকা-ের বিচার আপনারা দেখে যাবেন।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনা ১৬ তারিখে দেখিনি। পরদিন ১৭ জুলাই বিকেলে দেখেছি। যে ছেলে এভাবে মরতে পারে, একজন অভিভাবক হিসেবে বসে থাকতে পারিনি। আমার মনে হয়েছিল, আমাদের আর ভয় পাওয়ার অধিকার নেই। আবু সাঈদের আদর্শ ছিল সত্য ও ন্যায়ের। মৃত্যুর জন্য সে প্রস্তুত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বহু মানুষ বহুভাবে মারা যায়। কিন্তু তার মতো এভাবে কেউ মারা যায়নি। এটা জেনে শত শত তরুণ আত্মত্যাগ করেছে। আবু সাঈদ হত্যাকা-ের বিচারকাজ পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে শহিদ হন। এই দিনকে ‘জুলাই শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।