খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাত ১২টার দিকে ওই মেয়ের বাবা বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরমান হোসেন (৩২), সদস্য ইমন হোসেন (২৫) ও এনায়েত হোসেন (৩৫) এবং শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (৩২)। মামলার বাকি দুই আসামি হলেনÑ একটি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মুনির ইসলাম (২৯) ও ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল ইসলাম (২৩)। তারা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নিজেদের কর্মী নয় বলে দাবি করেন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার।
এদিকে, স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্ষক যে দলেরই হোক তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি প্রদান করতে হবে। পার্বত্য এলাকায় কোনো ধর্ষণ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় ধর্ষকরা পার পেয়ে যায় এবং পুনরায় অপরাধ সংঘটিত করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কবিতা চাকমা, দেবাশীষ চাকমা, নিশি ত্রিপুরা, উক্যনু মারমা, ওয়াপাইং মারমা। এদিকে মুনিগ্রাম স্কুলের শিক্ষার্থীরাও তার সহপাঠীর ওপর এমন নির্যাতনের প্রতিবাদে পৃথক সমাবেশ করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুন রথযাত্রার মেলায় অংশ নেওয়ার পর রাতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল ওই কিশোরী। সেখানে গভীর রাতে ছয়জন ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ছাত্রীর আত্মীয়কে বেঁধে রাখা হয়েছিল।
শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা জানান, সামাজিক লজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে মেয়েটি প্রথমে কিছু প্রকাশ করেনি। কিন্তু মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গত শনিবার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে হাসপাতালে আনার পর জ্ঞান ফিরলে ওই কিশোরী ঘটনাটি পরিবারকে জানায়।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাকে গুরুত্বসহকারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই আমরা অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে।