সতর্ক না থাকলে আরেকটি এক-এগারো ঘটা অসম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বারের শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত জুলাই-আগস্ট অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খুব সতর্ক থাকতে হবে। কিছু ঘটনা ঘটছে, যার আলামত ভালো না। আমরা ঐক্যবদ্ধ না থাকলে, সতর্ক না থাকলে আরেকটি এক-এগারো ঘটা অসম্ভব কিছু না। এ সময় তিনি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি করেন। তিনি বলেন, আর দেরি করা ঠিক হবে না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান ক্ষুণœ হতে পারে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, জুলাইয়ের স্পিরিট থেকে বাংলাদেশ সরে গেছে। এখন ঐক্যের জন্য নয়, এখন আমরা নিজের জন্য লড়ছি। তরুণরা এখন চাঁদার জন্য চিঠি দিচ্ছে। এ অবস্থায় বিএনপি সংস্কার চায় জানিয়ে তিনি বলেন, সংক্ষেপেই সংস্কার করা যেত। কিন্তু সরকার সংস্কারের কথা বলে অলীক জিনিস নিয়ে আসছে। যেমন, পিআর। দেশের মানুষ যেটা বুঝেই না। এ দেশে একটা মহল আছে যারা গণতন্ত্র চায় না।
এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকা উচিত। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৫-১৬ বছর ধরে এত কথা বলেছি যে, এখন আর কথা খুঁজে পাই না। একটা কথা প্রায়ই হয়, রাজনীতিবিদরা সব নষ্টের গোড়া। তা সত্ত্বেও রাজনীতিবিদদের সব কাজ করতে হয় এবং এ কাজ সম্পাদন করতে গিয়ে অনেক কিছুই করতে হয়। তখন তারা জনগণের দ্বারা সমালোচিত হন। মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পর এখন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। যারা বিপ্লব করবেন, তারা বিপ্লবী দল করবেন, বিপ্লবী সরকার গঠন করবেন, আমি সেটা বিশ্বাস করি। পাশাপাশি আমরা এটাও বিশ্বাস করি, জনগণের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আমরা সরকার গঠন করব, প্রতিশ্রুত কাজ করব এবং আবার জনগণের কাছেই ফিরে যাব।
তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চিন্তাধারার মধ্যেও পরিবর্তন আসে। সে পরিবর্তনের ফলে এমন একটি পরিস্থিতি আসে যে, রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন করতে হয় এবং সে পরিবর্তন ছাড়া রাষ্ট্রকে ধরে রাখা কঠিন হয়। তিনি বলেন, সরকারের মধ্যে আমার কিছু বন্ধু আছেন, যারা খালি বলেন যে, সুযোগ পেলেই তো আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলো, আক্রমণ করো। আমি বলি, আক্রমণ তখনই করা হয় যখন তোমরা ব্যর্থ হও। ৫ আগস্টের পর ৭ তারিখে আমরা একটা সভা করি। সেখানে আমরা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম। তখন আমাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা করা হয়েছে। তবে এখন আপনারা বুঝতে পারছেন, সে সমালোচনাটা ভুল ছিল। কারণ আমাদের কথা ছিল, যে প্রকৃত ক্ষমতাধর, তার হাতেই ক্ষমতা দেওয়া হোক। মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকতে হবে। তা না থাকায় আমরা কাদা ছোড়াছুড়ি করছি। যদিও গণতন্ত্রে কাদা ছোড়াছুড়ি থাকবেই। তবে বোঝাপড়াটা না থাকলে একটা তিক্ততা তৈরি হয়, যা ভবিষ্যতে সমস্যা সৃষ্টি করে।