চার কারণে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফ গত জুন মাসে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৪ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। গত মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি বলেছে, অর্থবছর শেষে এই হার হবে ৪ দশমিক ৯।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসনের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, গত জুনের পূর্বাভাসের তুলনায় অক্টোবরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস কমাল কেন আইএমএফ?
জবাবে শ্রীনিবাসন চারটি কারণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রথমত এই সময়ে সরকারের নীতিগত মিশ্রণ বা পলিসি মিক্স তুলনামূলকভাবে কড়াকড়ি হয়েছে; দ্বিতীয়ত, শুল্কনীতি ও বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা বড় ভূমিকা রেখেছে। আরও দুটি অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ওপর প্রভাব ফেলেছে বলে জানান আইএমএফের এই পরিচালক। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা, যা বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশায় প্রভাব ফেলবে। অন্যটি হলো আর্থিক খাতের দুর্বলতা। এ দুর্বলতার কারণে প্রভাব পড়বে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধিতে।
আইএমএফ বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হারের পূর্বাভাস জুনে দিয়েছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অথচ অক্টোবরে তা বাড়িয়ে করেছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। শ্রীনিবাসন এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এটা হবে মূলত বছরের শুরুর দিকে ঘটে যাওয়া সরবরাহ খাতে ধাক্কা লাগার ফলে। তবে আমি আশা করছি, মূল্যস্ফীতির হারটি ৮ দশমিক ৫ হতে পারে।’
চলমান ঋণ কর্মসূচির আকার এখন ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের এবং এই ঋণ কর্মসূচির আওতায় যেসব সংস্কার কার্যক্রম বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে, সেগুলোর অগ্রগতি এখন কোন পর্যায়েÑ এমন প্রশ্নের জবাবে আইএমএফের পরিচালক শ্রীনিবাসন বলেন, পর্যালোচনার জন্য আইএমএফের একটি দল শিগগির বাংলাদেশ সফর করবে। এবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। একটি হচ্ছে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব খাতে সংস্কার। অন্যটি আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার।