ঢাকা শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

বেসরকারি শিক্ষকদের অনশন শুরু, কাল যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ১২:৩৭ এএম

দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি হিসেবে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনশন শুরু করেছেন সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষা উপদেষ্টার ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ’ এর প্রতিবাদ ও দ্রুত বাড়ি ভাড়া, মেডিকেল ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারা অনশন শুরু করেন তারা। এ অনশন কর্মসূচি থেকে জানানো হয় আগামীকাল রোববার যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করার পরিকল্পনার কথা।

গতকাল সন্ধ্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আজ (গতকাল) আমাদের পরিকল্পনা ছিল অনশন করার, তা আমরা শুরু করেছি। আমরা টিএসসিতে সমাবেশ করেছি। আগামী রোববার লংমার্চের চিন্তা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিপন্ন, হতাশাগ্রস্ত শিক্ষকরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। এটাকে দুর্বলতা ভেবে ভুল করবেন না। ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারী একত্রিত হলে ঢাকা অচল করে দেওয়া হবে।’

তিনি জানান, প্রাথমিক শিক্ষকদের চার লাখ সদস্য তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর ভিপিসহ অসংখ্য জনমানুষ এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন।

দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘সরকার আমাদের সঙ্গে প্রহসন করছে, তামাশা করেছে। আমাদের যে দাবিগুলো মন্ত্রণালয় ডিসাইডেড। কিন্তু এখন তারা তিনটি দাবির একটির চার ভাগের এক ভাগ মানতে চাইছেন। অন্য দুটি দাবি নিয়ে কথাই বলছে না। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে কথা বলে এসে আমি শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেছি, তারা এ প্রস্তাবে সন্তুষ্ট কি না, তারা সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে গত রোববার থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সে দিন সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তারা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে চলে যান। ওই দিন দুপুরে শিক্ষকদের একটি অংশের ওপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে, জলকামানের পানি ছিটিয়ে এবং লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়। শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার বিকেলে তারা পদযাত্রা নিয়ে শহিদ মিনার থেকে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তবে হাইকোর্টের মাজার ফটকের সামনে পুলিশ পদযাত্রা আটকে দেয়। রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থানের পর সরে গিয়ে বাকি রাত শহিদ মিনারে অবস্থান করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে সরকার দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে এরপর ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির মাধ্যমে শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। ওই দিন প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর শাহবাগ মোড় ছেড়ে বিকেল ৫টার পর ফের শহিদ মিনারে অবস্থান নেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি ছিল। তবে ওই দিন সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক থাকায় পদযাত্রা স্থগিত করা হয়। কিন্তু শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কোনো সুরাহা না হওয়ায় শুক্রবার অনশনে বসার ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।