ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে গত শনিবারের সংঘর্ষে নিহত মো. নাসির উদ্দিনের মরদেহ দাফনে বাধা এবং কিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল রোববার সকালে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে এক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, এতে আবারও কয়েকটি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুনুর রশিদ ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে সাবুদ আলীর গোষ্ঠীর নাসির উদ্দিন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
নাসির উদ্দিন হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। রোববার সকালে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কবরস্থানে মরদেহ দাফনের চেষ্টা করা হলে বাধা দেওয়া হয়। নিহতের ভাতিজা খায়েশ মিয়া অভিযোগ করেন, ‘আজ (গতকাল) সকালে আমাদের বাড়ি তিন দিক থেকে ঘেরাও করে তারা বলে, লাশ কীভাবে দাফন হবে তা তাদের দেখার আছে। মার্ডার আরও হবে বলেও হুমকি দিয়েছে। এক কবরে দু-তিনজনকে কবর দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। আমরা কখন লাশ দাফন করতে পারব তা ঠিক করতে দিচ্ছে না।’
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দিন ধরে গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরের নৈরাজ্য চলছেই। শুক্রবার বিকেলে গ্রামের মৃত আবদুল হাসিম মিয়ার স্ত্রী শতবর্ষী মোসাম্মৎ বেগমের মৃত্যুর পর তার ছোট ছেলে নূরুল হককে লাশ দেখার সুযোগ না দিয়ে হারুনের পক্ষে থাকা চার ছেলে তড়িঘড়ি মায়ের লাশ দাফন করেন। এর পরই নূরুল হক ও তার ভাই জহিরুল হকের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্য পক্ষ জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের মতে, এর পেছনে কয়েক মাস আগের লুডু খেলায় ২০০ টাকা নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদও প্রভাব ফেলে।
সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) অমিতাভ দাস তালুকদার জানিয়েছেন, আজ (গতকাল) সকালে দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ হয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমানে গ্রামে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
নিহত নাসির উদ্দিনের পরিবার এবং স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত সময়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে গ্রামে শান্তি ফিরে আসে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন