হাঙ্গেরিয়ান ব্রিটিশ কথাসাহিত্যিক ডেভিড সালাই ‘ফ্লেশ’ উপন্যাসের জন্য মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার জিতেছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় লন্ডনের ওল্ড বিলিংসগেটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে ৫০ হাজার ডলার মূল্যের এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
‘ফ্লেশ’ সালাইয়ের ষষ্ঠ উপন্যাস। উপন্যাসের শুরু হয় হাঙ্গেরিতে মায়ের সঙ্গে একই অ্যাপার্টমেন্টে থাকা কিশোর ইস্তভানের জীবনে ঘটে যাওয়া এক চমকপ্রদ ঘটনার মাধ্যমে। এরপর লেখক তাকে অনুসরণ করেছেন সামরিক জীবনে, পরে লন্ডনে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে তার নতুন জীবনে। সংযত ভাষাশৈলীতে লেখা ‘ফ্লেশ’ অন্বেষণ করেছে পুরুষত্ব, শ্রেণি, অভিবাসন, ট্রমা, যৌনতা ও ক্ষমতার জটিল বিষয়গুলো।
সমালোচক কিয়ারান গডার্ড লিখেছেন, “ফ্লেশ হলো ‘অস্তিত্বের অচেনা নিস্তব্ধতার’ এক নির্মম প্রতিচ্ছবি। সালাইয়ের ভাষা হাড়ের মতো কঠিন ও সংক্ষিপ্তÑ যে চরিত্রগুলো সাধারণত সাহিত্যে জায়গা পায় না। সালাই আমাদের সেই মুখোশের আড়ালের মানুষটিকে দেখতে শেখান।”
বিচারকদের মতে, উপন্যাসটিতে অভিবাসন, শ্রেণি, মানসিক আঘাত ও ক্ষমতার মতো জটিল বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
ডেভিড সালাই জন্মগ্রহণ করেন মন্ট্রিয়ালে, হাঙ্গেরিয়ান পিতা ও কানাডীয় মাতার পরিবারে। বড় হয়েছেন লন্ডনে, পড়াশোনা করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। পেশাজীবনের শুরুতে কাজ করেছেন ফাইন্যান্সিয়াল বিজ্ঞাপনের বিক্রয়কর্মী হিসেবে, যা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখেন তার প্রথম উপন্যাস ‘লন্ডন অ্যান্ড দ্য সাউথ-ইস্ট’। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে, ‘স্প্রিং, দ্য ইনোসেন্ট’ এবং ছোটোগল্প সংকলন ‘টার্বুলেন্স’। বর্তমানে তিনি ভিয়েনায় বসবাস করছেন।
পেঙ্গুইন গ্রুপের ইমপ্রিন্ট জনাথন কেপ ‘ফ্লেশ’ প্রকাশ করেছে। এই প্রকাশনা সংস্থা বুকারের ইতিহাসে সর্বাধিক দশমবারের মতো পুরস্কার জিতেছে। গত বছরের বিজয়ী সামান্থা হারভির ‘অরবিটাল’ও একই প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।
এর আগে বুকার পুরস্কার জেতেন ভারতীয় লেখক বানু মুশতাক ও অনুবাদক দিপা ভাস্তি। চলতি বছরের ১৯ মে বিজয়ী হিসেবে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। কন্নড় ভাষায় রচিত ছোটগল্প গ্রন্থ হার্ট ল্যাম্পের জন্য বিশেষ এই সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন বানু মুশতাক। আর বইটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে পুরস্কার জিতেছেন দিপা ভাস্তি।

