ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

৬ দফা দাবি

বিটিআরসি ঘেরাও করে মোবাইল ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কার, সিন্ডিকেট প্রথা বাতিল ও মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করাসহ ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন মোবাইল ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। ফলে বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একই সঙ্গে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।

গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে ‘বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি’র ব্যানারে শত শত ব্যবসায়ী আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে সড়কে নেমে আসলে চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ। এ সময় বিটিআরসি ভবনসহ আশপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাড়তি পুলিশ টহল দেখা যায়। দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেন, গতকাল সন্ধ্যা ৬টার পর পর্যন্ত বিটিআরসি কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। তাদের মাঝে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারীও ছিলেন বলে জানা যায়। তবে এ বিষয়ে বিটিআরসির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) সেক্রেটারি আবু সায়ীদ পিয়াস বলেন, আমরা বহুবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বৈঠকের জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু একবারও আমাদের ডাকা হয়নি। আলোচনার সুযোগ পেলে সমাধান সম্ভব ছিল। এখন পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সারা দেশের খুচরা ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন। এখানে ব্যবসায়ীদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ এনইআইআর সংস্কার, সিন্ডিকেট প্রথা বাতিল এবং মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করা। তাদের অভিযোগ, এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে লাখো ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন এই নিয়মের ফলে একটি বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং বাড়তি করের চাপে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইলের দাম বেড়ে যাবে।

এমবিসিবির যমুনা ফিউচার পার্ক শাখার সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, এনইআইআর পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়িত হলে লক্ষাধিক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নতুন এই ব্যবস্থায় বিশেষ একটি গোষ্ঠী লাভবান হবে, আর বাড়তি কর ও জটিল প্রক্রিয়ার কারণে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের (শেরেবাংলা নগর জোন) সহকারী কমিশনার (এসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘বিটিআরসি ভবনের সামনে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা ডাইভারশন দিয়ে অন্য রাস্তায় যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। আগারগাঁও একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এটি বন্ধ থাকায় অন্য রাস্তায় ব্যাপক চাপ পড়েছে। বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর সকাল ১০টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দোকান বন্ধ রেখে রাজধানীর কারওয়ান বাজার-পান্থপথ এলাকায় জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেছিলেন বিভিন্ন শপিংমলের মোবাইল ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।

উল্লেখ্য, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনের ব্যবহার রোধ করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এর ফলে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে নিবন্ধনবিহীন, চুরি হওয়া বা অনুমোদনহীন আমদানি করা মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। এর ঠিক আগেই বড় ধরনের আন্দোলনে নামলেন ব্যবসায়ীরা।