ধূলিমলিন এই গৃহের কোণে জমে আছে অতীতের নীরবতা
যেখানে শব্দেরা আত্মহত্যা করেছে নীরবতার কবরখানায়।
দরজার কপাটে ঝুলে আছে সময়ের মরচে ধরা নিঃশ্বাস
খসে পড়া দেয়ালে আঁকা সেই মুখগুলো আজ শুধু প্রেতচ্ছায়া।
আয়নার ফ্রেমে আটকে আছে কারো চোরাগোপ্তা চাহনি,
যা কবে যেন আটকে পড়েছিল চোখের জলপথে
তবুও আজও তার প্রতিফলন জ্বলে ওঠে ক্ষণিক আঁধারে,
যেন স্মৃতি নয়, অনুপ্রবেশকারী কোনো প্রেতচেতন।
কোথা থেকে যেন বাজে অতীতের নিরুত্তাপ বাঁশি
যার সুরে ঘুম ভেঙে যায় ঘুমহীন প্রতীক্ষার প্রতিটি প্রহরে।
শ্রবণেন্দ্রিয়ে জমে ওঠে শব্দহীন বজ্রপাতের প্রতিধ্বনি,
মনে হয় এই গৃহে ভাষা ছিল, তবে তা হৃদয়ের বাইরে ছিল না।
প্রতিটা জানালা যেন একেকটি শ্রান্ত কবিতার কবরে পরিণত
যেখানে আলো এসে মৃত ব্যঞ্জনার মুখে অঞ্জলি দেয়।
চূর্ণ স্মৃতিগুলো ঝরে পড়ে মেঝের ছিদ্রপথে,
আর আমি সেগুলো কুড়িয়ে যাই অনন্ত দুঃখের জাবর কেটে।
এই ঘর, এই ধূলিঘর আসলে তা ধ্বংসের নয়
বরং তা এক অনতিক্রম্য স্মৃতিপাহাড়,
যার প্রতিটি ধূলিকণায় জমে আছে নিঃশব্দ ভালোবাসা
যা উচ্চারিত হলে পৃথিবী হঠাৎ থমকে দাঁড়াত।
কখনো মনে হয়, এই ধূলিঘর আমি নই তো?
আমি নই তো সেই অব্যক্ত বেদনায় পরিণত প্রতিধ্বনি?
আমি নই তো সেই কণ্ঠ, যে নিজেকেই শোনে না বহু বছর ধরে,
কারণ আমার স্মৃতি আমারই অন্তর্জাল, ধূলি আমারই চেতন?
তবুও পায়ে পায়ে হেঁটে চলি সেই ঘরের দিকে
যেখানে প্রতিটি স্মৃতি একেকটি জীবনচিহ্ন
ভাঙা, ছিন্ন, অথচ অমর।
স্মৃতির ধূলিঘর কখনো ভাঙে না
তারা শুধু জমে ওঠে, দহন হয়ে ওঠে
অভ্যন্তরের নির্বাক বিস্ময়ে।
আপনার মতামত লিখুন :