দুই বছর আগে কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় ৭ বছর বয়সি শিশু সায়মন হত্যা মামলায় তার চাচি শেফালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং শেফালীর ‘প্রেমিক’ বিল্লাল পাঠানকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এই রায় দেন। রায় দেওয়ার সময় দুই আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. ইকবাল হোসেন জানান, ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট বিকেলে সায়মন মায়ের সঙ্গে তিতাসের বাতাকান্দি বাজারে যায়। সেখান থেকে পানীয় কিনে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায়। ১৮ আগস্ট নিখোঁজের বিষয়ে তিতাস থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। পরে ১৯ আগস্ট সকালে বজলুর রহমানের বালুর মাঠের ঝোপের ভেতর থেকে সায়মনের অর্ধগলিত পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার চাচি শেফালী বেগম এবং অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তে বিল্লাল পাঠানের নাম উঠে আসে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে আসামি শেফালী বেগম ও বিল্লাল পাঠানকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগপত্র দায়ের ও দীর্ঘ শুনানির পর ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি বিল্লাল পাঠানকে মৃত্যুদ- এবং সায়মনের চাচি শেফালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দুজনকেই লাশ গুমের অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সাজাও ঘোষণা করেন বিচারক।
আইনজীবী মো. ইকবাল হোসেন জানান, চাচি শেফালী বেগমের সঙ্গে বিল্লাল পাঠানের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় শিশু সায়মনকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়।
নিহত সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার বলেন, আমি আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট। আমি রাষ্ট্রের কাছে আমার সন্তান হত্যাকারীদের শাস্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করার আবেদন জানাচ্ছি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন