পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রহিমা ফুড লিমিটেড দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী সিটি গ্রুপের একটি কোম্পানি। গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ২০২৩ সালে প্রয়াত হওয়ায় দেশের আইন অনুসারে প্রায় ২৬ কোটি টাকা সমমূল্যের শেয়ার তার উত্তরাধিকার স্ত্রী-সন্তানের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, প্রয়াত ফজলুর রহমানের হাতে রহিমা ফুডের ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৫২টি শেয়ার ছিল। ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার রহিমা ফুডের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ১৬২ টাকা। সেই হিসাবে ফজলুর রহমানের হাতে থাকা কোম্পানির শেয়ারের মোট বাজারমূল্য দাঁড়ায় ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। প্রয়াত ফজলুর রহমানের নামে থাকা এসব শেয়ার তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে স্থানান্তর করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর শিল্পোদ্যোক্তা ফজলুর রহমান মারা যান। নিয়ম অনুযায়ী, মৃত্যুর পর তার নামে থাকা সম্পদ ও শেয়ার উত্তরাধিকার বা স্ত্রী-সন্তানদের মধ্যে আইন অনুযায়ী বণ্টন হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আদালতের উত্তরাধিকার সনদের ভিত্তিতে উত্তরাধিকারদের মধ্যে রহিমা ফুডের শেয়ার স্থানান্তর করা হয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ফজলুর রহমানের সন্তানদের মধ্যে ছেলে মো. হাসান পেয়েছেন ৫ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শেয়ার। আর তিন মেয়ে পেয়েছেন ২ লাখ ৮৫ হাজার ২৫৯টি করে শেয়ার। আর প্রয়াত ফজলুর রহমানের স্ত্রী হামিদা রহমান পেয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৪ হাজার শেয়ার। রহিমা ফুডের ওয়েবসাইটের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কোম্পানিটির পর্ষদে রয়েছেন প্রয়াত ফজলুর রহমানের স্ত্রী হামিদা রহমান, ছেলে মো. হাসান, দুই মেয়ে শম্পা রহমান ও ফারজানা রহমান।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, দুর্বল কোম্পানি হিসেবে একসময় শেয়ারবাজার থেকে তালিকাচ্যুত করা হয়েছিল রহিমা ফুডকে। পরে ২০১৭ সালে কোম্পানিটির তৎকালীন পরিচালকদের কাছ থেকে শেয়ার কিনে কোম্পানিটি সচল করার উদ্যোগ নেয় সিটি গ্রুপ। সে বছর কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের শেয়ার কিনে নেয় সিটি গ্রুপ। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত রহিমা ফুড ছিল ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী কোম্পানি। সিটি গ্রুপ এটির মালিকানা নেওয়ার পর কারখানাটিতে নারকেল তেলের উৎপাদন শুরু করা হয়। এরপর ২০২০ সালে কোম্পানিটিকে আবারও তালিকাভুক্ত করা হয় শেয়ারবাজারে।
এদিকে উত্তরাধিকারের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণার দিনে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার বাজারে রহিমা ফুডের শেয়ারের দাম বেড়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০ টাকা বা প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬২ টাকায়। দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৫ লাখ ৮২ হাজার শেয়ার, যার বাজারমূল্য ছিল ৯ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। রহিমা ফুড বর্তমানে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ভালো মৌলভিত্তির ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানি।
সর্বশেষ গত বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানির শেয়ারের বড় অংশ, অর্থাৎ প্রায় ৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে সাড়ে ৩৭ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন