ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

আপাতত স্পিকারের বাসভবনেই  থাকবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ১১:০০ পিএম

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনের পর যিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তার জন্য বাসভবন প্রস্তুতের কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। তবে স্থায়ী নিবাস তৈরি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত স্পিকারের বাসভবনেই থাকবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে একত্র করে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস হিসেবে প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিন ভবন দুটি পরিদর্শনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব নজরুল ইসলাম, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কানিজ মওলা, প্রধান উপদেষ্টার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ফেরদৌস হাসান সেলিম ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুব উস সামাদ।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলেও সচিব কানিজ মওলার নেতৃত্বে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন পরিদর্শন করেন। পরদিন গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা স্পিকারের বাসভবন ঘুরে দেখেন। এ সময়ে ভেতরে সংস্কার কাজে নিয়োজিত একাধিক ব্যক্তিকেও দেখা গেছে। দুপুরের পর স্পিকারের বাসার গেট বন্ধ দেখা যায়। তবে পেছনের ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনের সংস্কার কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন দুটিকে একত্র করে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী বাসভবনে রূপ দেওয়া হবে। পৃথক দুটি ভবনের মধ্যে সহজ যাতায়াতের জন্য একটি দুই স্তরবিশিষ্ট করিডর নির্মাণ প্রাথমিক পরিকল্পনায় আছে। তবে বিকল্প হিসেবে দেয়াল অপসারণের বিবেচনা করা হচ্ছে বলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে। একই সঙ্গে এ-১ ও এ-২ বাসা দুটিও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

চারটি ভবন ছাড়াও জাতীয় সংসদের হুইপদের থাকার জন্য আরও ছয়টি বাসভবন আসাদ গেট দিয়ে সংসদ ভবন এলাকায় ঢুকে বাঁ পাশের প্রথম সড়কে। পূর্বমুখী গেটের বি-১ থেকে বি-৬ ভবনগুলোয় জাতীয় সংসদের হুইপদের জন্য নির্মাণ করা, যার একটিতে থাকতেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছয়টি ভবনও নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অফিশিয়াল কার্যক্রমের জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তিন মেয়াদে গণভবনে থেকেছেন শেখ হাসিনা। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা বাসভবন প্রস্তুত করতে হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসেবে গণভবন নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়।