অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনো অবস্থায়ই ফেব্রুয়ারি মাস অতিক্রম করা যাবে না। এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের জনগণ কোনো ধরনের বিলম্ব বা ভিন্নতা মেনে নেবে না। কোনো ধরনের টালবাহানা বা বিলম্ব সহ্য করবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ পিপলস ফোরামের উদ্যোগে ‘অনির্বাচিত সরকার নয়, নির্বাচিত সরকার চাই’ শীর্ষক এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সরকার ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তাদের আমি সমালোচনা করতে চাই না। তবে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে এর মানে হলো, মানুষ গণতন্ত্র চায়। স্বৈরাচারের পতন গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় ঘটেছে, এই সাধারণ ও মৌলিক বিষয়টি যদি এই সরকার উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশ, গণতন্ত্র এবং সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান তিনটিরই বড় ক্ষতি হবে। সে কারণেই আমি সরকারকে বলতে চাই, দেশের মানুষ অনেক আগেই একটি সাধারণ নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছে। কারণ, এ ধরনের দৃষ্টান্ত আমাদের দেশেই রয়েছে। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর মাত্র তিন মাসের মধ্যে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ নির্বাচন পরিচালনা করে জাতিকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটি প্রমাণ করে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া সম্পূর্ণ সম্ভব। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনির্বাচিত সরকার নয়, যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে। যদি মনে হয় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব, তাহলে সেটিও বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই ফেব্রুয়ারি মাস অতিক্রম করা যাবে না। এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের জনগণ কোনো ধরনের বিলম্ব বা ভিন্নতা মেনে নেবে না। কোনো ধরনের টালবাহানা বা বিলম্ব আমরা সহ্য করব না।
ভারতের উদ্দেশে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, হাসিনা আপনাদের রাষ্ট্রে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এটি এক বিরল ঘটনা। খুনিকে কেউ আশ্রয় দেয়? গণতন্ত্র ধ্বংসকারীকে কেউ আশ্রয় দেয়? সীমাহীন লুটপাটকারীকে কেউ আশ্রয় দেয়? এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে খুব কমই দেখা যায়। তিনি বলেন, ইরানের শাহ যখন গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতিত হয়েছিলেন, তিনি ছিলেন আমেরিকার ঘনিষ্ঠ ও সমর্থিত ব্যক্তি। তবুও তিনি আমেরিকায় প্রবেশাধিকার পাননি। পরে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আমেরিকা তার ক্ষমতাসীন অবস্থায় যেসব সুবিধা নিয়েছিল, পতনের পর তাকে আশ্রয় দেয়নি।