বিশেষ নিয়োগ ও সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা পর্যন্ত পদযাত্রা করতে চেয়েছিলেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। কিন্তু শাহবাগ মোড়ের আগে থানার সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা প্ল্যাকার্ড ও স্লোগান দিতে দিতে যমুনা অভিমুখে যেতে চাইছেন, কিন্তু পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে সামনে এগোতে পারছেন না। এ সময় অনেককে ব্যারিকেড সরাতে টানাটানি এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করতেও দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে টানা পাঁচ দিন ধরে। গত ১৯ অক্টোবর থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ৪০-৫০ জন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিলও করেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যমুনার দিকে যাচ্ছিলাম, কিন্তু পুলিশ আমাদের পথ আটকে দিয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সদস্যসচিব আলিফ হোসেন, ডাকসুর সদস্য ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাইসুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামরুজ্জামান, আব্দুল ওয়াহেদ, কামাল হোসেন পিয়াস ও প্রতিনিধি আজাদ হোসেন।
প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছেÑ প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী বেকারদের জন্য বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। জাতীয় শ্রুতিলেখক নীতিমালা সংশোধন করে শ্রুতিলেখক মনোনয়নে স্বাধীনতা দিতে হবে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন ব্রেইলভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম ও পিএইচটি সেন্টারের শূন্য পদে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করা (সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৩৫ হলে তাদের জন্য ৩৭ বছর নির্ধারণ)।
রমনা জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা তাদের রাস্তা থেকে সরে গিয়ে মিছিল করতে বলেছি। এ সময় নিজেদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়েছে। তেমন কোনো ঘটনার উদ্ভব হয়নি।’ শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাদের কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তা থেকে সরিয়ে জাদুঘরের সামনে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে।’
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা গত এক বছরের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না পাওয়ায় তারা আবারও রাস্তায় নেমেছেন।

