বিএনপির এখনকার আচরণে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিল পাওয়া যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ নিয়ে জামায়াতের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়ায় আজ শনিবার এক সংলাপে তিনি এই মন্তব্য করেন।
হামিদুর বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিবকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু ওনারা বলেছেন, জামায়াতের আহ্বানে তাঁরা সাড়া দেবেন না। বিগত রেজিমে কিন্তু এ ধরনের সুর সব সময় বাজাত যে ওমুকের সঙ্গে বসবে না। এই কালচার থেকে কি বের হতে পারি না? বিএনপি যদি আহ্বান করে জামায়াত যাবে এবং অন্যদেরও আহ্বান জানাবে।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেওয়ার পর সংবিধান সংস্কারে গণভোটের সময় নিয়ে বিপরীত অবস্থানে একসময়ের জোটসঙ্গী বিএনপি ও জামায়াত। অন্তর্বর্তী সরকার দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলের ‘ট্রেস কনসালটেন্সি’ নামে এক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা’ সে প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, অঙ্গীকার যুক্ত করে চার্টার হয়েছে। এর দুটি পার্ট। দ্বিতীয়টা হচ্ছে বাস্তবায়ন যা স্বাক্ষরের সঙ্গে যুক্ত না। আমাদের সিদ্ধান্তে তাই ছিল। বাস্তবায়ন বিষয়টা আলাদা বিষয়। এর ওপর স্বাক্ষর হয়নি। এরপরই বিরোধ তৈরি হয়।’
গণভোট এবং সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে একসঙ্গে করার দাবি জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যারা আগে গণভোট চাইছে, তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তার প্রতিক্রিয়ায় জামায়াত নেতা হামিদুর বলেন, ‘আমরা পজিটিভলি এগোচ্ছি, নির্বাচনের ওপর থ্রেট হবে, এমন কাজে আমরা নেই।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে জামায়াতের কোনো আপত্তি নেই বলে জানান তিনি। তারপরও পাঁচ দফা দাবিতে রাজপথে নামার বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াত আগে থেকেই মাঠে আছে, হঠাৎ করে আসেনি। আলোচনা এবং রাজপথে নিজেদের দাবি জানানো সমানভাবে চলছে। জামায়াত সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিসহ পাঁচটি দাবিতে সাতটি ইসলামী দলকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে রয়েছে।
গণভোট আগে চাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনে মানুষের মনোযোগ থাকে দল ও প্রার্থীর ওপর। নির্বাচনের কেন্দ্র দখল, ভোটকেন্দ্র স্থগিত হওয়া, আবার দুই ভোট একসঙ্গে হলে অনেক সময় লাগবে। এতে সব ভোটার হয়তো ভোটও দিতে পারবে না।

