প্রায় এক মাস ধরে মানিকগঞ্জের পদ্মা নদীর একটি শাখা নদীতে আতঙ্ক ছড়ানো কুমিরটি অবশেষে স্থানীয়দের তৈরি ফাঁদে ধরা পড়েছে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা এলাকায় কয়েকজন যুবক কুমিরটিকে আটক করতে সক্ষম হন। গতকাল শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হরিরামপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘হরিরামপুর উপজেলার ধুলসুরা ও হারুকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এবং সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের নদীতে কুমিরটি একাধিকবার দেখা গিয়েছিল। শুক্রবার রাতে স্থানীয়রা চৌকিঘাটা এলাকা থেকে সেটি আটক করেছে। বর্তমানে গ্রাম পুলিশ সেখানে অবস্থান করছে। আজ আমরা ঢাকার বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাব।’
প্রায় এক মাস ধরে কুমিরটির কারণে নদীপাড়ের মানুষ আতঙ্কে ছিলেন। প্রথমে কুমিরটি হরিরামপুর উপজেলার বোয়ালী, আইলকুন্ডি, খামারহাটি ও হারুকান্দি ইউনিয়নের তন্ত্রখোলা এলাকায় দেখা গেছে। পরে এটি সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চরবংখুড়ি ও চৌকিঘাটা এলাকায় চলে আসে।
চরবংখুড়ি গ্রামের মো. রফিক বলেন, ‘আমরা নদীতে নামতে ভয় পেতাম। সকালে বা বিকেলে কেউ মাছ ধরতে যেত না। বড় একটা কুমির ঘুরে বেড়াচ্ছে শুনে সবাই আতঙ্কে ছিলাম।’ কুমির ধরার কাজে অংশ নেওয়া স্থানীয় যুবকরা জানান, তারা দীর্ঘদিন কুমিরটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছেন। রাহাত বলেন, ‘আমরা প্রায় এক মাস ধরে কুমিরটির গতিবিধি লক্ষ্য করেছি। শুক্রবার রাতে চৌকিঘাটা এলাকায় পানির ওপর ভেসে উঠলে দড়ির ফাঁদ পেতে আমরা সেটিকে ধরতে সক্ষম হই।’
বন কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘কুমিরটি সম্ভবত পদ্মার মূল ধারার কুমির, খাবারের খোঁজে শাখা নদীতে ঢুকে পথ হারিয়ে ফেলেছিল। আমরা এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করব। সুস্থ থাকলে উপযুক্ত স্থানে, সম্ভব হলে সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় অবমুক্ত করা হবে।’ কুমিরটি ধরা পড়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রামের মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন, কেউ ভিডিও ধারণ করছেন, কেউ আবার কুমিরটির সঙ্গে সেলফি তুলছেন।

