সোমবার, ০৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


প্রবাস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৫, ০১:৩২ এএম

জাপানে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান

প্রবাস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৫, ০১:৩২ এএম

জাপানে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান

টেকনিক্যাল ইন্টার্ন, এসএসডব্লিউ ও স্পেশালিস্ট ভিসায় নতুন সম্ভাবনা, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি জাপান এখন কর্মী সংকটে ভুগছে। দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ বয়স্ক হয়ে পড়ায় উৎপাদনশীল খাতে শ্রমশক্তির ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাপান সরকার বিদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত করছে নানা কর্মসংস্থানের সুযোগ। সেই সুযোগের অন্যতম অংশীদার হচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশি তরুণদের জন্য জাপানে কাজের প্রধান তিনটি পথ হলো : টেকনিক্যাল ইন্টার্ন, এসএসডব্লিউ ও স্পেশালিস্ট

টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রোগ্রাম: শেখার সঙ্গে উপার্জনের পথ

জাপানে কাজের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাথমিক ধাপ হলো টেকনিক্যাল ইন্ট্রান ট্রেনিং  প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশের তরুণরা ৩-৫ বছর মেয়াদে জাপানে গিয়ে কাজ শেখে ও উপার্জন করে। বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের মধ্যে ইতোমধ্যে  চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই প্রোগ্রামটি পরিচালনা করে বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং, আর জাপানে এর তত্ত্বাবধানে থাকে জিটকো ও অটিআইটি। ২০১৯ সালে জাপান সরকার চালু করে  বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থান  (এসএসডব্লিউ) ভিসা, যা বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করেছে। একই বছর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপানের এমওসি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই প্রোগ্রামের আওতায় কর্মী পাঠানোর একমাত্র সরকারি সংস্থা হলো ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার।

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:

বয়স: ১৮-৩০ বছর, শিক্ষাগত যোগ্যতা: অন্তত এসএসসি বা এইচএসসি, জাপানি ভাষায় প্রাথমিক দক্ষতা (জএেলপিিট এন৫/এন৪), শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থতা।

কাজের ক্ষেত্র: কৃষি, নির্মাণ, মৎস্য, গার্মেন্টস, ইলেকট্রনিক্স ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে কাজের সুযোগ রয়েছে।

সুবিধা- মাসিক বেতন:

১,০০,০০০-১,৫০,০০০ ইয়েন যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮০ হাজার থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে থাকবে আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা, প্রশিক্ষণ শেষে  বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থান (এসএসডব্লিউ) ভিসায় রূপান্তরের সুযোগ। এসএসডব্লিউ (বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থান)  

আবেদন প্রক্রিয়া:

জাপানি ভাষায় দক্ষতা অর্জন (জেএলপিটি এন৪ বা জেএফটি বেসিকি) অর্জন করতে হবে, নির্দিষ্ট খাতে স্কিল পরীক্ষা দিতে হবে, উত্তীর্ণ হওয়া। বিএমইটি ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন  িি.িনসবঃ.মড়া.নফ করতে হবে। জাপানি নিয়োগদাতার সঙ্গে সাক্ষাৎকার ও চুক্তি করতে হবে। ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করে যাত্রা হবে।

কাজের প্রধান সেক্টর:

কেয়ারগিভার (বয়স্কদের সেবা), কৃষি ও নির্মাণ, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, ফুড প্রসেসিং, যন্ত্রপাতি, গাড়ি ও জাহাজ নির্মাণ।

সুবিধা:

মাসিক বেতন হতে পারে ১,৫০,০০০-২,৫০,০০০ ইয়েন, আবাসন, বিমা ও অন্যান্য ভাতা, এসএসডব্লিউ-২ ভিসায় উন্নীত হলে পরিবার নেওয়ার সুযোগ, স্থায়ীভাবে বসবাসের সম্ভাবনা। বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে শতাধিক কর্মী জাপানে এসএসডব্লিউ ভিসায় কাজ করছেন। বিশেষ করে কেয়ারগিভার ও নির্মাণ খাতে বাংলাদেশিদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

স্পেশালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস : উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবীদের কর্মক্ষেত্র

শিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য রয়েছে ঝঢ়বপরধষরংঃ রহ ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঝবৎারপবং ভিসা, যা সাধারণত ঊহমরহববৎ/ঝঢ়বপরধষরংঃ/ ঐঁসধহরঃরবং নামেও পরিচিত। এই ভিসায় আবেদন করতে হলে জাপানি কোম্পানির চাকরির অফার প্রয়োজন হয়। এই ভিসার সুবিধা হলো- দীর্ঘমেয়াদি ভিসা, পরিবারসহ বসবাসের অনুমতি, স্থায়ী রেসিডেন্স পারমিটের সম্ভাবনা।

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:

স্নাতক ডিগ্রি (ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি, বিজনেস, ভাষা, মার্কেটিং। জাপানি ভাষায় উচ্চ দক্ষতা (জেএলপিটি এন২ ও এন১)। সংশ্লিষ্ট খাতে কাজের অভিজ্ঞতা।

কাজের ক্ষেত্র:

আইটি, অনুবাদ, শিক্ষা, মার্কেটিং, আন্তর্জাতিক ব্যবসা, ব্যাংকিং, ট্যুরিজম ইত্যাদি।

সুবিধা:

এই ভিসার আওতায় বাংলাদেশি পেশাজীবীরা ইতোমধ্যে আইটি কোম্পানি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অনুবাদ সংস্থায় সফলভাবে কাজ করছেন।

প্রস্তুতির ধাপ: বাংলাদেশ থেকে কীভাবে যাবেন

জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণের জন্য অনুমোদিত ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে ঔখচঞ বা ঔঋঞ-ইধংরপ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ। দক্ষতা অর্জন; নির্দিষ্ট খাত অনুযায়ী স্কিল ট্রেনিং ও সার্টিফিকেট সংগ্রহ। বিএমইটি রেজিস্ট্রেশনÑ সরকারি ডাটাবেজে নাম অন্তর্ভুক্ত করা। চাকরির সাক্ষাৎকার ও অফার লেটার সংগ্রহ। ভিসা প্রসেসিং ও যাত্রা সম্পন্ন করা। সরকারি সংস্থা বোয়েসেল ও বিএমইটি যৌথভাবে এসব প্রক্রিয়া পরিচালনা করে।

বাড়ছে বাংলাদেশিদের চাহিদা :

জাপানে বর্তমানে প্রায় ১৫,০০০-এর বেশি বাংলাদেশি কর্মী বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। বিশেষ করে কেয়ারগিভার, নির্মাণ ও আইটি সেক্টরে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী পাঁচ বছরে জাপানে আরও দেড় থেকে দুই লাখ বিদেশি কর্মী প্রয়োজন হবে, যার একটি বড় অংশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে নেওয়া হবে। জাপানে কর্মসংস্থান এখন বাংলাদেশের তরুণদের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত। তবে সফল হতে হলে প্রয়োজন জাপানি ভাষায় দক্ষতা, ধৈর্য এবং সরকারি অনুমোদিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জাপানের সঙ্গে একাধিক শ্রমচুক্তি করেছে, যা এই সুযোগকে আরও নিরাপদ করেছে। জাপান এখন শুধু উন্নত প্রযুক্তির দেশ নয়, বরং দক্ষতা ও পরিশ্রমে বিশ্বাসী বাংলাদেশি তরুণদের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ঠিকানা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!