মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ০২:০১ এএম

যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভূতুড়ে পরিবেশ

রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ০২:০১ এএম

যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে  ভূতুড়ে পরিবেশ

যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সারা দেশের মতো রংপুরেও গড়ে উঠেছিল যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রায় ৯ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি একসময় গরু-ছাগলের খামার, হাঁস-মুরগি পালন, কৃষি ও হর্টিকালচার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মমুখী দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করত। কিন্তু বর্তমানে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আধা-পাকা ভবনটি এখন ভূতুড়ে অবস্থা ধারণ করেছে, পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবহারিক ক্লাসে ব্যবহারের উপযোগী কোনো উপকরণ নেই, মুরগির ফার্ম ও গবাদিপশুর খামার বহুদিন ধরে বন্ধ। নেই পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা। ফলে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রশিক্ষণার্থী নিয়মিত অংশ নিতে পারছেন না।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘আমরা নিরুপায়। আমাদের কিছু করার নেই। ভবনের সংস্কারে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই যুব প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটটি দীর্ঘদিন ধরেই জনবলসংকট, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং সরঞ্জাম সংকটে ভুগছে। অথচ সম্প্রতি জাপান সরকার বাংলাদেশের ৫টি খাতে প্রশিক্ষিত এক লাখ কর্মী নেবে বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ‘গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ অন্যতম। কিন্তু রংপুরের এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটিতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে প্রশিক্ষণার্থীরা হতাশ।
রংপুরের গঙ্গাচড়ার লোকমান হোসাইন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশিক্ষণে সমস্যা নেই। কিন্তু থাকার জায়গা ও ক্লাসরুমের অবস্থা এতটাই খারাপ, ভবনের কক্ষে ঢোকাও কষ্টকর। সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে রংপুর বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে।’
রংপুর যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৭০ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এর মধ্যে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষিতে দুই ব্যাচে ৩ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ১২০ জন। হাঁস-মুরগি, কৃষি ও গবাদিপশু পালনে আরও ৩টি ১ মাস মেয়াদি ব্যাচে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ১৫০ জন। বর্তমানে ৬০ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
রংপুর সদরের মরিচটারী এলাকার মাহবুব হোসেন মিল্লাত বলেন, ‘আমি তিন মাসের প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এখন পল্লি চিকিৎসা করে পরিবার চালাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক, এত বছরের প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোনো আধুনিক ভবন নেই, অবকাঠামোতেও উন্নয়ন নেই।’
খটখটিয়া এলাকার রাজল মিয়া বলেন, ‘আমি এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁস-মুরগির খামার করেছি। পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। প্রশিক্ষকেরা অত্যন্ত যোগ্য। কিন্তু ভবনের দারুণ অভাব। এটা খুবই কষ্টদায়ক।’
এ বিষয়ে কো-অর্ডিনেটর মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য অভ্যন্তরীণ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা চাহিদাপত্র দিয়েছি। ভবন সংস্কারের একটি প্রস্তাবও রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বরাদ্দ থাকলেও কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না, তা আমাদের জানা নেই।’
প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মতে, ভবন সংস্কার ও আবাসনব্যবস্থা উন্নত হলে উত্তরাঞ্চলের বহু বেকার যুবক এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারতেন। এখন প্রয়োজন শুধু আন্তরিকতা ও দ্রুত উদ্যোগ।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!