এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রাজ্জাক। পেয়েছিলেন ‘রাজ’ উপাধি। এদেশের চলচ্চিত্রকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান তিনি। অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন, যা আজও মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। রোমান্টিক, সামাজিক, পোশাকি, অ্যাকশন, সব ঘরানায় রূপালী পর্দায় উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল তার।
আজও তার অভিনীত সাদাকালো সিনেমা নতুন প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়। আজ নায়করাজ রাজ্জাকের প্রয়াণ দিবস। ২০১৭ সালের এই দিনে তিনি এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে চলে যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
তার তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আরেক ছেলে বাপ্পী দেশের বাইরেই স্থায়ী হয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর বিএফডিসিতেও নায়ক রাজ পরিবারের যাওয়া আসা একেবারেই কমে গেছে। তার মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে বিএফডিসিতে কোনো সমিতিরই বিশেষ আয়োজন নেই।
দেশের সিনেমায় আজ থেকে ৫৮ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৬ সালে ‘১৩নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে তার যাত্রা শুরু হয়। তবে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে নিজের অবস্থান গড়ে নেন। এরপর থেকে টানা কয়েক দশক প্রধান নায়ক হিসেবেই তিনি অভিনয় করেছেন।
বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজ্জাকের ছোট ছেলে সম্রাট বলেন, ‘দিন যত যাচ্ছে জন্মদিন নিয়ে উচ্ছ্বাস কমে যাচ্ছে। প্রয়াণ দিবস তো তেমন কেউ এখন মনেই রাখে না। একটা সময় আব্বুর জন্মদিনে বড় পার্টি হতো। সেই সময়টা খুব উপভোগ করতাম। বিশেষ দিন বলেই নয়, আব্বুর জন্য সবসময়ই দোয়া করি। আজকেও যথারীতি পারিবারিকভাবেই আব্বুর প্রয়াণ দিবসটি নিজেদের মতো করেই কাটিয়ে দেব। আমি সবসময়ই আব্বুর কবরের কাছে যাই, আজকেও যাব। আল্লাহর কাছে দোয়া করে শুধু এতটুকুই বলব- আল্লাহ যেন আমার আব্বুকে বেহেস্ত নসিব করেন। আব্বু কোনোদিন কাউকে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকলে যেন ক্ষমা করে দেন। আব্বুর জন্মদিনে বা প্রয়াণ দিবসে কেউ বিশেষ আয়োজন করলেন কি করলেন না এসব নিয়ে আমাদের সত্যিই কোনো ভাবনা নেই।’
রাজ্জাক অভিনীত অনেক উল্লেখযোগ্য সিনেমা রয়েছে। যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘কাগজের নৌকা’, ‘রংবাজ’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা’, ‘স্লোগান’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘স্বরলিপি’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বেঈমান’, ‘আবির্ভাব’, ‘মনের মতো বউ’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’, ‘দর্পচূর্ণ’, য আগুনে পুড়ি’, ‘নাচের পুতুল’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘আনার কলি’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’ ইত্যাদি।