রাজশাহী মহানগরের ৩০টি ওয়ার্ডে খাদ্যশস্য বিক্রয়ের জন্য নতুন ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে মামলার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা ও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) মাইন উদ্দিন ১ জুলাই নতুন ৩০ জন ডিলার নিয়োগ দেন। অথচ মাত্র ১৩ দিন আগে তিনি তার অধীনস্থ আট জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নেই, সেসব এলাকায় ৩০ জুনের মধ্যে ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। রাজশাহী মহানগরের ৩০ ওয়ার্ডে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও নিজেই নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
পুরোনো ডিলাররা অভিযোগ করেন, তারা দীর্ঘ ১০ থেকে ৩০ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। গত বছরের আগস্টে তাদের নিয়োগ বাতিল করা হলেও আদালতে মামলা চলমান থাকায় তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। যদিও তারা ১৭ জুন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে নবায়নের জন্য আবেদন করেন, তবু নবায়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পাশাপাশি দাবি করেন নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে অনৈতিক উপঢৌকন নেওয়া হয়েছে।
পুরোনো ডিলার ও স্থানীয়রা বলছেন, ‘মামলা চলাকালীন নতুন নিয়োগ দেওয়ায় এটি আদালত অবমাননার শামিল’ এবং ‘রাজশাহী বিভাগে অন্য সাত জেলায় পুরোনো ডিলারদের নিয়োগ বহাল থাকলেও শুধু রাজশাহী মহানগরে একযোগে বাতিল করা হয়েছে’।
নগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি এবং নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের অনৈতিক লেনদেনের কারণে।’ ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক যুবদল সভাপতি আব্বাস আলী জানান, ‘অনিয়ম ছাড়া সবাইকে একযোগে বাতিল করাটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’
রাজশাহী খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী জানান, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক বর্তমানে ফ্রান্সে রয়েছেন, যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালনকারী বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান বলেন, ‘নিয়োগসংক্রান্ত তথ্য মাইন উদ্দিন স্যার দিতে পারবেন।’
অন্যদিকে, রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক বলেন, ‘নিয়োগ কার্যক্রমের স্ববিরোধিতা এড়াতে পূর্ববর্তী ডিলারদের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। যারা আপত্তি করছেন তারা আইনি পথে যেতে পারেন।’
পুরোনো ডিলাররা সরকারের ন্যায়বিচার ও তদন্তের দাবি জানান, যেন তাদের অবৈধভাবে নিয়োগ বাতিল ও লাইসেন্স নবায়নে বাধার বিষয়টি তদন্ত করা হয় এবং ওএমএস ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :