জাতীয় পার্টির চারটি অংশের নেতারা একযোগে অংশ নিলেন একটি স্মরণসভায়। এইচ এম এরশাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলটির সাবেক প্রভাবশালী তিন জ্যেষ্ঠ নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নু, যারা সম্প্রতি জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।
তবে অনুষ্ঠানে জিএম কাদেরের কোনো অনুসারী নেতা ছিলেন না। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এটি একটি বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ, যার লক্ষ্য জাতীয় পার্টিকে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ করা।
‘পল্লিবন্ধু এরশাদ স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত এ সভা সোমবার গুলশানের একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
সভায় জাতীয় পার্টি (রওশন এরশাদ), জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এবং জাতীয় পার্টি (মতিন) অংশগ্রহণ করে, যা দীর্ঘদিন পর জাতীয় পার্টির বিভিন্ন বিভক্ত অংশের একমঞ্চে আসার দৃষ্টান্ত।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পরই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। যেনতেন নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনের কোনো মূল্য থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে ১৪শ’ মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১২৪ জন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে প্রাণ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতি জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে।
জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে আনিসুল বলেন, তারা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সোহাগ (লাল চাঁদ) হত্যার মতো ঘটনা এর প্রমাণ।
জাতীয় পার্টির (রওশন এরশাদ) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ জিএম কাদেরকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি বিপ্লবের সঙ্গে ছিলেন না। বসে ছিলেন কোন দিক জিতবে দেখে পতাকা ধরার জন্য। আপনি একজন সুযোগসন্ধানী।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, আমার বিরুদ্ধে দল ভাঙার অভিযোগ থাকলেও আমি কখনও দল ভাঙিনি, বরং দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আজ এরশাদ স্মরণসভায় সবাইকে একসঙ্গে দেখে ভালো লাগছে। ঐক্য কার্যকর হলে দেশ উপকৃত হবে।
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা আমাদের ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বহু ভুল করেছি। সেই ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। এখন আমাদের প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টি (মতিন)-এর মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য দিদারুল আলম চৌধুরী, জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, নাজমা আক্তার, জিয়াউল হক মৃধা, জনতা পার্টি বাংলাদেশের উপদেষ্টা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর।
জাপার সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন খোকা, সাহিদুর রহমান টেপা, মোস্তফা আল মাহমুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :