যশোরে টানা বৃষ্টিতে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। ড্রেনের নোংরা পানি ঢুকে পড়েছে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি হাসপাতালে পর্যন্ত। এতে বৃষ্টি থামলেও দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না স্থানীয়দের। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা অনুপযোগী হওয়া এবং নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কারের ঘাটতিকে দুষছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, এমন বৃষ্টিতে শহর ডুবে যাবে, তা অনুমান করাও কঠিন ছিল না।
যশোর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার দুপুর আড়াইটার পর থেকে মূষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর থেকে কম বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার ৬২ মিলিমিটার ও সোমবার ৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকা ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কয়েকটি ওয়ার্ডের মধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে। শহরের বেজপাড়া চোপদারপাড়া, কবরস্থান পাড়া, আনসার ক্যাম্প এলাকা, টিবি ক্লিনিক, শংকরপুর, রেলগেট খড়কী, রেলরোড, প্যারিস রোড, কারবালা, বারান্দীপাড়া, সিটিকলেজ পাড়া উপশহর, নওয়াপাড়া, চাঁচড়াসহ অধিকাংশ এলাকা। এসব এলাকার ঘরের মধ্যেও পানি ঢুকে পড়েছে।
শংকরপুর এলাকার আনসার আলী, রেজাউল ইসলাম ও সাজ্জাদ হোসেন জানান শহরের পানি নিষ্কাশন হয় দক্ষিণ পাশের বিল হরিণায়। সেখান থেকে মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে পানি বের হয়ে যায়। কিন্তু বিল হরিণায় পানি নিষ্কাশনের ড্রেনটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এ ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন করার কারণে জলাবদ্ধতা বাড়ছে। অসহায়
মানুষ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তির দাবি করছেন।
বেজপাড়ার বাসিন্দা পরিবেশকর্মী ও রাজনীতিবীদ জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন এখনো চোপদারপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উচিত বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে কোনো জায়গা দিয়ে পানি বের হয়, সেই জায়গা পরিষ্কার করা। সেই সঙ্গে ভৈরব নদ, মুক্তেশ্বরী ও হরিনার বিলের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা। হরিণার বিল দিয়ে পানি মুক্তেশ্বরী নদে গিয়ে পড়ে। কিন্তু মুক্তেশ্বরী পলিতে ভরে গেছে। আর বিল হরিণার মধ্যে অনেক স্থাপনা তৈরি হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কশানের জয়গা নেই। নদ-নদী, খাল নালা অবৈধ দখল মুক্ত করতে না পারলে পৌরসভার ড্রেন পরিষ্কার করে কোন সুফল আসবে না। যশোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, কিছু জায়গায় ড্রেনের পানি বের হওয়ার মুখে পলিথিন জমে থাকায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে। সেগুলো পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পরিষ্কার করছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে নানাভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।